
যুক্তরাজ্যে যৌন নিপীড়নের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ইথিওপীয় নাগরিক হাদুশ কেবাতুকে ভুলবশত কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার পর পুনরায় আটক করে দেশ থেকে বিতাড়ন করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার মানবিক ত্রুটির কারণে কেবাতুকে এসেক্সের এইচএমপি চেলমসফোর্ড কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে দুইদিনব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে গত রবিবার উত্তর লন্ডনের ফিন্সবুরি পার্ক এলাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী ও এক নারীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আদালত ১২ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।
পুনরায় আটক হওয়ার পর তাকে মঙ্গলবার রাতে বিমানে তুলে জোরপূর্বক ইথিওপিয়ায় পাঠানো হয়। তবে বিতাড়নের আগে £৫০০ প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ফ্লাইট বাতিল, পুনঃবুকিং ও সম্ভাব্য আইনি ব্যবস্থার ব্যয় এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, স্বেচ্ছায় দেশত্যাগে ‘ফ্যাসিলিটেটেড রিটার্ন স্কিম’-এর আওতায় বিদেশি নাগরিকেরা £১,৫০০ পর্যন্ত সুবিধা পান। তবে জোরপূর্বক প্রত্যাবাসনে সাধারণত অর্থ প্রদান করা হয় না।
ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় পৌঁছানোর পর দেশটির ফেডারেল পুলিশ কেবাতুকে অল্পসময়ের জন্য আটকে রাখে। পরে আইনি ভিত্তির অভাবে তাকে মুক্তি প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এক বিবৃতিতে বলেন, “এ ধরনের ভুল অগ্রহণযোগ্য।” তিনি জনগণের ক্ষোভের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন এবং জানান, ওই অপরাধীকে দেশত্যাগে বাধ্য করতে সরকার সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এদিকে, ঘটনাটি তদন্তে একজন কারা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন এবং করণীয় নির্ধারণে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক উপকমিশনার ডেম লিন ওয়েন্স।
ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কারাগার থেকে এ সপ্তাহে আর কোনো বহিষ্কার কার্যক্রম পরিচালিত হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য নীল হাডসন বলেন, “এ ধরনের ঘটনা জনমনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
কেবাতু ২৯ জুন ছোট নৌকায় ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।