
যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর রেচেল রিভসের দক্ষিণ লন্ডনের পারিবারিক বাড়ি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স সংগ্রহ না হওয়ার ঘটনায় লেটিং এজেন্ট হার্ভি অ্যান্ড হুইলার দুঃখ প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক গ্যারেথ মার্টিন জানান, তাদের এক সাবেক প্রপার্টি ম্যানেজার বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মী ভাড়াটিয়া প্রবেশের আগেই আকস্মিকভাবে চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়নি। ফলে এই ত্রুটি প্রতিষ্ঠানটির নজরে আসেনি। তিনি বলেন, মালিকেরা যে লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, এবং ধারণা করেছিলেন যে আবেদন ইতোমধ্যে করা হয়েছে—এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।
অন্যদিকে, রেচেল রিভস এই ঘটনাকে “অনিচ্ছাকৃত ভুল” উল্লেখ করে সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, প্রথমদিকে তারা ধারণা করেছিলেন যে লাইসেন্সের কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু বুধবার ডেইলি মেইল থেকে যোগাযোগ পাওয়ার পরই বিষয়টি তার নজরে আসে। পরে তিনি খুঁজে পান, এজেন্সি তার স্বামীকে লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে লিখিতভাবে জানিয়েছিল এবং আবেদন করার দায়িত্বও নিয়েছিল। এ বিষয়ে চিঠিতে তিনি বলেন, এজেন্সির একজন কর্মী চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় আবেদন আর এগোয়নি। তবে মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার এখনও তার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখছেন।
জুলাই ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর রিভস ১১ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে ওঠেন এবং তার চার শয়নকক্ষের ব্যক্তিগত বাড়িটি ভাড়া দেন। ওই এলাকা সাউথওয়ার্ক কাউন্সিলের আওতাভুক্ত, যেখানে ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সিলেক্টিভ লাইসেন্স বাধ্যতামূলক এবং এর জন্য ৯৪৫ পাউন্ড ফি নির্ধারিত। লেটিং এজেন্টটি দাবি করেছে, অন্যান্য সব নিরাপত্তা সনদ যথাযথভাবে ছিল এবং আবেদন জমা পড়লে লাইসেন্স অনুমোদনে কোনো সমস্যা হতো না।
এদিকে বিরোধী কনজারভেটিভ দল অভিযোগ তুলেছে যে রিভস সত্য গোপন করেছেন এবং অন্যের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন। তাদের দাবি, তিনি এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদন সম্পন্ন হয়েছে কি না, তা যাচাই করেননি। দলীয় মুখপাত্র বলেছেন, আইনের দৃষ্টিতে লাইসেন্স সংগ্রহের চূড়ান্ত দায় মালিকের ওপরই বর্তায়, তাই রিভসের জবাবদিহি এড়ানোর সুযোগ নেই। তারা প্রধানমন্ত্রীকে “মেরুদণ্ড দেখানোর” আহ্বান জানিয়েছে এবং “ন্যায্য তদন্ত” শুরু করার দাবি করেছে।
ঘটনাটি সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। একই দিনে বিপজ্জনক ছুরি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত উদ্যোগ ঘোষণা করলেও তা গণমাধ্যমে তেমন গুরুত্ব পায়নি। সরকার এখনো উদ্বিগ্ন, এই ইস্যু ভোটারদের কাছে কী ধরনের বার্তা দেবে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি সরকারের ভাবমূর্তিতে কী প্রভাব ফেলতে পারে।