নিউইয়র্ক

নিউ ইয়র্কে জিনাতের মৃত্যু: পুলিশ বলছে আত্মহত্যা, পরিবারের সন্দেহ

2891_download (16).jpg

নিউ ইয়র্কে ট্রেন লাইনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কলেজ ছাত্রী জিনাত হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য মানতে নারাজ তার পরিবার ও প্রবাসীরা।শনিবার দুপুরে ব্রুকলিনের বায়তুল জান্নাহ মসজিদে জিনাতের জানাজার আগে তার নানা মো. কবীর সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, “জিনাত আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা আমরা মনে করি না।

“ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ওপর থেকে পড়ে মৃত্যু’। এটা আসলে ‘হেইট ক্রাইম’। এর প্রতিবাদে কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”আমির হোসেন ও জেসমীন হোসেন দম্পতির একমাত্র মেয়ে জিনাত নিউ ইয়র্কের হান্টার কলেজের ছাত্রী ছিলেন, তাদের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জগতপুর গ্রামে।

বুধবার রাতে ম্যানহটান থেকে ব্রুকলিনগামী ট্রেনের ৫৫ স্ট্রিট সাবওয়ে থেকে ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কলেজের ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে ওই জায়গায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে জিনাতের মৃত্যুতে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবরের একটি ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ওই ভিডিও জিনাতের মৃত্যুর ঘটনার দাবি করে কিছু সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পাতাল রেলের স্টেশনে অপেক্ষার সময় জিনাতের ব্যাগ ছিনিয়ে নিতে ছিনতাইকারী তাকে ধাক্কা দিয়ে ট্রেনের সামনে ফেলে দেয়।

একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকবিহ্বল জিনাতের মা জেসমীন হোসেনএকমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকবিহ্বল জিনাতের মা জেসমীন হোসেনজিনাত তার মা-বাবার সঙ্গে নিউ ইয়র্কের অস্টম অ্যাভিনিউ এবং ৪২ স্ট্রিটের এক বাসায় থাকতেন। ২০১৫ সালে অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তিনি। তার একমাত্র বড় ভাই আবিদ হোসেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন।
শনিবার জানাজার সয় জিনাতের কফিনের পাশে তার বাবা আমির হোসেনকে দেখা যায় শোকে বাকরুদ্ধ অবস্থায়। তিনি  বার বার কফিন ছুঁয়ে মেয়েকে অনুভব করতে চাইছিলেন।

জানাজা শেষে জিনাতের কফিন মসজিদের সামনে আনার পর হুইল চেয়ারে মা জেসমীন হোসেন কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।পরে নিউ জার্সিতে দাফন করা হয় জিনাতকে।

তার খালু যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গমাতা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডা. এনামুল হক জানান, তারা জিনাতের মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য নিয়ে ‘পুলিশের লুকোচুরির প্রতিবাদে’ সমাবেশ ও প্রেস কনফারেন্স করবেন।

‘সাউথ এশিয়ান আমেরিকান ফান্ড ফর এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং’ (স্যাফেস্ট) নামে প্রবাসীদের একটি সংগঠনও জিনাতের মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার দুপুরে সিটি মেয়র অফিস সংলগ্ন সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

জিনাতের মৃত্যুর সঠিক কারণ তদন্ত ও নাগরিকদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে ওই কর্মসূচিতে প্রবাসীদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এ সংগঠনের প্রধান নির্বাহী মাজেদা উদ্দিন।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও