যুক্তরাজ্য

১৭ মে ২০২২, ১৮:০৫
আরও খবর

যুক্তরাজ্যে মানুষের দুর্গতি, দারিদ্র্য আরো বাড়বে 

2913_images.jpg

মূল্যস্ফীতির চাপ নানাভাবে পড়তে শুরু করেছে যুক্তরাজ্যে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে আগামী বছর দেশটির প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার পরিবারকে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসির

জানা গেছে, মূল্যস্ফীতির চাপে আগামী বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে দারিদ্র্য বাড়বে। প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার পরিবার অভাবের মধ্যে পড়বে এবং অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১২ লাখে উঠবে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ।

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি স্থবির হয়ে পড়ছে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চলতি বছর যুক্তরাজ্য আবারও মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ। ঋণগ্রস্ত ও অভাবে থাকা মানুষদের সাহায্য করতে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে যুক্তরাজ্যের রাজস্ব বিভাগ বলেছে, তারা দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় জ্বালানির মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার এখন ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থায় আছে। এ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে উঠবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড।

এই বাস্তবতায় মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের সর্বজনীন ঋণ ২৫ ইউরো বাড়ানোর জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সে দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। তা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যের চরম দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক-চতুর্থাংশ সদস্য দরিদ্র—এমন পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ লাখে উঠবে বলে শঙ্কা।

এদিকে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ২০২৪ সাল পর্যন্ত তা ৩ শতাংশের ওপরে থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো, যদিও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ শতাংশের ওপরে। একই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পাবে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চের
(এনআইইএসআর) পূর্বাভাস ছিল, ২০২২ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু এখন তারা বলছে, বছরের শেষ দুই ত্রৈমাসিকে ব্রিটিশ অর্থনীতি সংকুচিত হবে। অর্থাৎ আবার মন্দার কবলে পড়বে যুক্তরাজ্য।

এনআইইএসআরের সহকারী পরিচালক স্টিফেন মিলার্ড বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয়, এর ফলে যুক্তরাজ্যে সরবরাহ ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি সচল করতে রাজস্ব নীতি নয়, বরং আর্থিক নীতি জোরদার করার কথা বলেন তিনি।

দেশটির রাজস্ব বিভাগের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি শক্তিশালী উত্তরণের পথে ছিল। কিন্তু নানা কারণেই এখন উদ্বিগ্ন হওয়ার অবকাশ আছে। সরকারের সহযোগিতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলেন তিনি মনে করেন।

সর্বাধিক পঠিত


আরও খবর
ভিডিও