সংস্কৃতি ও বিনোদন

'জায়েদ চার মাস ধরে মৌসুমীকে হয়রানি করছে' চড়-গুলির হুমকিতে তোলপাড়

3329_download (1).jpg

কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়। একটি চড়। কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলির হুমকি। রীতিমতো তোলপাড়। টক অব দ্য কান্ট্রি। ঘটনাটি গেল শুক্রবারের। সামনে আসে শনিবার রাতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, অভিনেতা-প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ঢুকেই চিত্রনায়ক জায়েদ খানকে চড় মারেন খ্যাতিমান নায়ক ওমর সানী। বিতণ্ডার একপর্যায়ে জায়েদ খান কোমর থেকে পিস্তল বের করে সানীকে গুলি করার হুমকি দেন।

জায়েদ অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু কেন এই লঙ্কাকাণ্ড? নেপথ্যে কি? চিত্রনায়িকা মৌসুমীর সঙ্গে কি ঘটেছিল জায়েদ খানের? নানা আলোচনা। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, কয়েকদিন আগে মৌসুমীর সঙ্গে জায়েদ খান খারাপ আচরণ করেন। সে কারণেই অনুষ্ঠানে ঢুকে ওমর সানী সরাসরি জায়েদ খানকে চড় মারেন। মৌসুমীকে কেন ডিস্টার্ব করেছেন তাও জানতে চান?

 মৌসুমীকে কী ধরনের ডিস্টার্ব করেছেন জায়েদ খান। গতকাল এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিস্তারিত বলতে চাইলেন না ওমর সানী। এক সময়ের জনপ্রিয় এ নায়ক বলেন, আমি এত কিছু বিস্তারিত বলতে পারবো না। আমাদের একটা ফ্যামিলি স্ট্যাটাস আছে। আমার ৩১ বছরের ক্যারিয়ার। ২৭ বছরের বিবাহিত জীবন। আমরা একটা সম্মান নিয়ে চলি সমাজে। আমাদেরকে সবাই শ্রদ্ধার চোখে দেখে। জায়েদ খান অনেকদিন ধরে মৌসুমীর সঙ্গে বেয়াদবি করে আসছিল। 

ডিপজল ভাইয়ের কাছে বিচার দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। তাই চড় মেরেছি। চড় মারার পর পিস্তল তাক করেছিল। আমি বলে দিয়েছিলাম। গুলি করবা, করো। কোনো সমস্যা নাই। এমন ঘটনার পর জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবেন কিনা? ওমর সানী বলেন,  না, মামলা করবো না। কারণ আমরা মামলাবাজ মানুষ না। এ ধরনের কোনো চিন্তাভাবনাও নেই। কথায় কথায় মানুষকে হুমকি ধামকি দেয়া, মামলা করা এরকম কোনো রেকর্ড আমাদের নেই। এমনকি আমার পরিবারের কেউ কখনো কারও বিরুদ্ধে মামলা করেনি। এদিকে জায়েদ খান বলেছেন, ওমর সানী স্বাভাবিক ছিল না, সেরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার কাছে পিস্তলই ছিল না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এরকম অভিযোগ আনা হয়েছে। 

এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। মৌসুমী আপা সিনিয়র মানুষ। আমি তাকে কেন ডিস্টার্ব করবো। মনগড়া কথা বললে তো হবে না। আমি এ ব্যাপারে মৌসুমী আপার সঙ্গে কথা বলবো। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সেটা এখনো চলমান। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে শুনানি আছে। তাই আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্যই এসব বলা হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে ডিপজল বলেন, গত কিছুদিন ধরে আমার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কেটেছে। বিয়েতে আমার সহকর্মীসহ অনেক অতিথি এসেছেন। পত্রিকায় দেখলাম, কোনো এক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে আমার কথা ছেপেছে। আসলে বিষয়টি আমি জানিই না। জানার কোনো কারণও নেই। 

শত শত অতিথিকে অভ্যর্থনা জানানো এবং তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় নিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে এমন কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে কোনো ভদ্রলোকও বিশ্বাস করবে না। আরও অনেক গণ্যমান্য অতিথিদের সঙ্গে ওমর সানী ও জায়েদকে আমিই অনুষ্ঠানে অভ্যর্থনা জানিয়েছি। যদি ধরেও নিই, তাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য রয়েছে, তাহলে কি তারা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে এমন ঘটনা ঘটাবে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তারা তো শিল্পী, তারা জানে কোথায় কেমন ধরনের আচরণ করতে হয়। এ ঘটনার ব্যাপারে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।    

'জায়েদ চার মাস ধরে মৌসুমীকে হয়রানি করছে'
নায়িকা মৌসুমীকে বিরক্ত করায় চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন নায়ক ওমর সানি। আজ রোববার রাতে এফডিসিতে এসে শিল্পী সমিতির কক্ষে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি। গত ১০ জুন শুক্রবার রাতে অভিনেতা ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলার সময়  জায়েদকে চড় মারেন সানি। এই সময় ক্ষেপে গিয়ে পিস্তল বের করে সানিকে গুলি করার হুমকি দেন জায়েদ খান। ওমর সানি অভিযোগপত্রে লেখেন, আমি ওমর সানি অত্র সমিতির একজন সদস্য এবং সাবেক কমিটির সহ সভাপতি ছিলাম। দীর্ঘ ৩২ বছর যাবত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আসছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে,  সমিতির সদস্য জনাব জায়েদ খান গত চার মাস যাবত আমার স্ত্রী মৌসুমীকে নানা হয়রানি ও বিরক্ত করে আসছে। আমার সুখের সংসার ভাঙার জন্য বিভিন্ন কৌশলে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে আসছে। এ ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়ে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি তার প্রমাণ আমার এবং আমার ছেলের কাছেও আছে।

তাছাড়া মুরুব্বি হিসেবে আমি এই বিষয়ে অভিযোগ করেছি। কিন্তু উক্ত বিষয়ের কোনো সমাধান হয়নি। অভিযোগে ওমর সানি আরও লেখন, ডিপজল ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে জায়েদ খানের সাথে দেখা হলে এই বিষয়ে সংযত হওয়ার জন্য আমি অনুরোধ করি। এতে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং হঠাৎ করে তার পিস্তল বের করে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অতএব আমি মনে করি এমন একজন পিস্তলধারী সন্ত্রাসী বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য থাকতে পারে না। উল্লেখিত বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনাপূর্বক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও