সংস্কৃতি ও বিনোদন

জায়েদের পক্ষে সাফাই :  ওমর সানী-মৌসুমীর সংসারে ভাঙনের সুর

3353_download (1).jpg

আইকন দম্পতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ওমর সানী-মৌসুমী। ২৭ বছরের সংসার। দুজন দুজনাকে কতোটা ভালোবাসেন তা নানান সময়ে প্রমাণ মিলেছে। তবে এমন মধুর সম্পর্কে হঠাৎ করে চিড় ধরেছে। পরিস্থিতি যে খুবই নাজুক তা নিয়ে এখন আর কোনো সন্দেহ নেই। দুজনের দূরত্ব একেবারে স্পষ্ট। দেড় মাস ধরে কথা হয় না তাদের মধ্যে। আর এই দূরত্বের নেপথ্যে ওঠে এসেছে আলোচিত নায়ক জায়েদ খানের নাম। তিন দিন ধরেই মিডিয়া পাড়ায় এ নিয়ে তুমুল আলোচনা। ওমর সানীর অভিযোগ মৌসুমীকে ডিস্টার্ব করেন জায়েদ।

কী ধরনের ডিস্টার্ব কিংবা আসলে কী ঘটেছে তা খোলাসা করেননি তিনি। তার বর্ণনা অনুযায়ী, ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে জায়েদ খানকে তার চড় দেয়া এবং গুলির হুমকি পাওয়ার পর তিনি অভিযোগ দেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে। সেখানে তিনি এও বলেন, জায়েদ তার সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন। এরপরই শুরু হয় গুঞ্জন। তবে সেই সব অভিযোগ অস্বীকার ও একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন ওমর সানীর স্ত্রী মৌসুমী। গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদেরকে পাঠানো এক অডিও বার্তায় মৌসুমী চড় ও পিস্তল-কাণ্ডে ওমর সানীকে মিথ্যাবাদী দাবি করে জায়েদের পক্ষে সাফাই গেয়ে সন্দেহের দানা আরও তীব্র করলেন। মৌসুমী জানান, জায়েদ খানের কোনো দোষ নেই। এটা যদিও আমাদের একান্তই ব্যক্তিগত সমস্যা, সেই সমস্যা আমাদের পারিবারিকভাবে সমাধান করা উচিত ছিল। 

এই নায়িকা বলেন, আমার প্রসঙ্গ টানার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমি জায়েদকে অনেক স্নেহ করি। ও আমাকে যথেষ্ট সম্মান করে। আমাদের মধ্যে খুব ভালো কাজের সম্পর্ক আছে। সেখানে আমাকে অসম্মান করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এ ধরনের কথা জায়েদ বলতে পারে, তেমন কোনো মানসিকতা তার মধ্যে দেখিনি। জায়েদ অনেক ভালো ছেলে। সে কখনো আমাকে অসম্মান করেনি। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে ভক্ত-অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, ওমর সানী-মৌসুমীর সংসার টিকবে তো? বা তারা কি বিচ্ছেদের দিকেই হাঁটছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যোগাযোগ করলে মৌসুমীর সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে দূরত্ব চলছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ওমর সানী। মৌসুমী অডিও বার্তা দেয়ার পর গতকাল দুপুরে মানবজমিনকে মুঠোফোনে এক সময়ের জনপ্রিয় এই নায়ক বললেন, ‘আমি যা বলেছি স্পষ্ট করেই বলেছি। আমি শ্রদ্ধা রেখেই কথা বলতে চাই। আমার পরিবারের প্রতি, মৌসুমীর প্রতি আমার প্রচণ্ড শ্রদ্ধা আছে, আমার ছেলেমেয়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। সে যা বলেছে, কী ভেবে বলেছে আই ডোন্ট নো।

এই বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন যাবৎ একটু দূরত্ব তো চলছিল। চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আপনারা ভালো জানবেন, তার সঙ্গে আমার ফোনেও কথা হচ্ছিল না। আমি তার ব্যাপারে মন্দ কথা, খারাপ কথা কিছুই বলবো না। কারণ সে এখনো আমার স্ত্রী। আমার সন্তানের মা। একজন গর্জিয়াস মা। একটা কথা বলতে চাই- আমি কি বলেছি, না বলেছি সম্পূর্ণ আমার ছেলে ফারদিন, আমার মেয়ে ফাইজা আছে। আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে জায়েদ খান যে ডিস্টার্ব করে। ফারদিন বলুক আর ফাইজা বলুক। আমার ছেলেমেয়েরা বলুক এই বিষয়গুলো। আমি এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে চাই না। এদিকে, সংসার টিকিয়ে রাখতে হাল ছাড়তে চান না ওমর সানী। ফেসবুক লাইভে এসেও সেজন্য তিনি মৌসুমীকে নিয়ে কোনোরকম নেতিবাচক মন্তব্য না করার আহ্বান জানান। পরিবার সম্পর্কেও বাজে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, দয়া করে কেউ খারাপ মন্তব্য করবেন না।

ওমর সানী বলেন, আমি পরিবারের সঙ্গে থাকতে চাই, স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে থাকতে চাই। আমার স্ত্রী আছে, ছেলে আছে, মেয়ে আছে। ভাই আছে, বোন আছে। আমি সবাইকে নিয়ে থাকতে চাই। ঈমান নিয়ে বাঁচতে চাই। ফেসবুক লাইভে ওমর সানী বেশ কয়েকবার বলেন, আমি মৌসুমীকে অসম্মান করে কিছু বলতে চাই না। ওমর সানীর লাইভ ও মৌসুমীর অডিও প্রকাশের পর নেট দুনিয়ায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। এটি একান্তই পারিবারিক ঝামেলা নাকি জায়েদ খানের সঙ্গে মৌসুমীর অন্য কোনো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে- এমন প্রশ্নও করেছেন অনেকে। তবে সানী-মৌসুমী দম্পতির ছেলে ফারদিন বলেন, আমি তো আমার আব্বুকে পাচ্ছি, আম্মুকে পাচ্ছি। হ্যাঁ, অনেক বিষয় নেয় মনোমালিন্য থাকে। এটা স্বাভাবিক। তবে আব্বু-আম্মু দু’জন চাচ্ছেন যেন বিষয়টা দ্রুত সমাধান হয়ে যায়।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মহরতে ওমর সানী ও মৌসুমীর প্রথম দেখা। ততদিনে ওমর সানীর প্রথম সিনেমা মুক্তি পেলেও মৌসুমীর তখনো শুটিংই শুরু হয়নি। তাদের প্রথম কথা হয় মৌসুমীর বাসায়। ১৯৯৪ সালের ২রা ডিসেম্বর অগ্রগামী চলচ্চিত্র প্রযোজিত, দীলিপ সোম পরিচালিত ‘দোলা’ ছবির মাধ্যমে প্রথম জুটি বাঁধেন ওমর সানী ও মৌসুমী। এরপর একটা সময় তাদের প্রেম এবং ১৯৯৬ সালের ২রা আগস্ট তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে। ‘দোলা’ ছাড়াও  ‘আত্ম অহংকার’, ‘প্রথম প্রেম’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’, ‘হারানো প্রেম’, ‘গরিবের রানী’, ‘প্রিয় তুমি’, ‘সুখের স্বর্গ’, ‘মিথ্যা অহঙ্কার’, ‘ঘাত প্রতিঘাত’, ‘লজ্জা’, ‘কথা দাও’ ‘স্নেহের বাঁধন’ , ‘সাহেব নামে গোলাম’সহ আরও বেশ কিছু ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে জুটি হিসেবে কাজ করেছেন দুজনে।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও