রাজনীতি

বিএনপির কাছে দুটি আসন-একটি মন্ত্রণালয় চায় শরিকরা

3703_ezgif-1-351030a09e.jpg

নির্বাচনথেকে দূরে সরতে সরতে জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদলের জায়গাটাও খুইয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। গতএক দশকের বেশি সময় বারবার আন্দোলন-সংগ্রামের ঘোষণা দিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে নানান ছক কষছে দলটি।সম্প্রতি পুরোনো মিত্রদের সঙ্গে সংলাপও শুরু করেছে। সংলাপে নানান করণীয় ও পরিকল্পনার পাশাপাশিআসন বণ্টন, মন্ত্রণালয় নিয়েও রীতিমতো দরকষাকষি করছে শরিক দলগুলো। যদিও কোনো আলোচনা এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি।

সূত্রজানায়, গত ২৩ মেস্থায়ী কমিটির সভায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। সেই অনুযায়ী ২৪ মে প্রথমদিন নাগরিক ঐক্যের তোপখানা রোডের কার্যালয়ে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপ শুরু করে বিএনপি। এরপর বাংলাদেশ লেবার পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সঙ্গে সংলাপে বসে বিএনপি। গত ২২ জুনজাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতিরঅসুস্থতার জন্য বিদেশযাত্রার কারণে এবং ২৭ জুন গণঅধিকারপরিষদের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিবের অসুস্থতাজনিত কারণে সংলাপ স্থগিত করা হয়।

বিএনপিরএ উদ্যোগের পর থেকে মিত্রদেরমধ্যে আগামী নির্বাচন ও সরকার গঠননিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়।

জানতেচাইলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেরশরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন বিএনপির শরিক হিসেবে আছি। সংলাপ করেছি, ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাবো। তারেক রহমান যে জাতীয় সরকারেরপ্রস্তাবনা দিয়েছেন সেখানে আমাদের আগ্রহ আছে।’

আসনবণ্টন নিয়ে এখনো বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ন্যূনতম দুটি আসন ও একটি মন্ত্রণালয়েরজন্য দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেবো।

আসনজয়ের মতো ভোটার-সমর্থক ন্যাপের রয়েছে কি না- এমনপ্রশ্নে তিনি বলেন, দেখেন, এদেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে যতগুলো রাজনৈতিক দল আছে তাদেরনিজস্ব সক্ষমতা নেই বলেই তারা জোট করেছে। আমরাও করেছি।

গতনির্বাচনে জোট থেকে আসন দেওয়া হয়নি ন্যাপ ভাসানীর, আসন পায়নি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিকপার্টি জাগপা। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপি গত নির্বাচনে ১০টিআসন চেয়েছিল। ছাড় পেয়েছিল পাঁচটিতে, নাগরিক ঐক্য পেয়েছিল চারটি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি তিনটি চেয়ে পেয়েছিল একটি, কল্যাণ পার্টি পেয়েছিল দুটি, কাজী জাফরের জাতীয় পার্টি পেয়েছিল একটি ও এনপিপি পেয়েছিলএকটি আসন।

 

তবেআগামী নির্বাচন ও তারেক রহমানঘোষিত জাতীয় সরকার প্রসঙ্গে বিস্তারিত এখনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপির শরিক দলগুলোর নেতারা।

সূত্রজানায়, এবার প্রত্যেক দল থেকেই বিএনপিরকাছে ন্যূনতম দুটি আসন এবং একটি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।

বাংলাদেশলেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, আমরা এ বিষয়ে এখনোকোনো আলোচনা করিনি, গত নির্বাচনে তিনটিআসন চেয়েছিলাম একটি পেয়েছি। লেবার পার্টি সব সময়ই যৌক্তিকবিষয়টি দাবি করে। ন্যাশনালপিপলস পার্টি এনপিপির চেয়ারম্যান ডক্টর ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জোটে রয়েছি। বিএনপির সঙ্গে সংলাপও করেছি। সংলাপে আন্দোলন, সংগ্রাম, নির্বাচন, সরকার গঠনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিএনপিরকাছে আসন-মন্ত্রণালয় দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে নির্বাচন হোক, এমপি হই তারপর দেখাযাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, সংলাপে আমাদের আলোচনা হয়েছে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে, তারপর নির্বাচনের পর বিজয় হলে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।তবে আসন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচিত হলে সবাই মিলে একটি সরকার গঠন করবে আপাতত প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে যখন আলোচনা হবে তখন বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা হবে।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও