কানাডা

কানাডার আদিবাসী স্কুলে নিগ্রহ সাংস্কৃতিক ‌‘গণহত্যা’ : পোপ

4016_images.jpg

কানাডা থেকে ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, মাথায় না আসায় সফরের সময় তিনি ‘গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করেননি।শনিবার পোপ ফ্রান্সিস বলেন, কানাডায় আদিবাসীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে-তা আসলে ‘গণহত্যা' হিসেবে গণ্য করা উচিত। ছয় দিনের সফরে ক্যাথলিক গির্জার নিয়ন্ত্রণাধীন স্কুলগুলোতে নির্যাতনের শিকার হওয়াব্যক্তিদের কাছে ক্ষমা চান তিনি।

রোমে ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পোপ। তখনই ‘গণহত্যা' শব্দটি উল্লেখ করেন তিনি। তার কথায়, শিশুগুলোকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা, সংস্কৃতি বদলে দেওয়া, ঐতিহ্যের ধারা পাল্টে দেওয়া, জাতিগত পরিবর্তন করা, এগুলো আসলে সংস্কৃতির বদল।তিনি বলেন, হ্যাঁ গণহত্যা একটা ‘টেকনিক্যাল ওয়ার্ড'। তবে আমি যা বর্ণনা করেছি, তা আসলে গণহত্যাই।

কানাডার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন ২০১৫ সালে জানায়, আদিবাসী শিশুদের জোর করে তাদের পরিবার, বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল। আবাসিক স্কুলে তাদের ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা’ করা হয়েছিল।

১৮ শতকের শেষ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত, ক্যানাডায় অন্তত ১৩৯টি স্কুল ছিল গির্জার নিয়ন্ত্রণে। প্রায় দেড় লাখ আদিবাসী শিশুকে এই স্কুলে পাঠিয়ে দিয়েছিল সরকার। নিজেদের পরিবার, ভাষা ও সংস্কৃতি থেকে শিশুদের মাসের পর মাস, এমনকি কয়েক বছর দূরে রাখা হতো। যৌন নির্যাতন এবং শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগও রয়েছে গির্জার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সেই সময় হাজার হাজার শিশু অপুষ্টি, অবহেলাজনিত কারণ এবং রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

তবে কানাডা সফরের সময় ‘গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করেননি পোপ। পরিবর্তে স্কুলগুলিতে ‘সাংস্কৃতিক বিনাশ'-এর জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।পোপ ফ্রান্সিস কানাডা সফরকে তার ভগ্নস্বাস্থ্যের পরীক্ষা হিসেবেও দেখেছেন। রোমে ফেরার পথে তিনি স্বীকার করেন এভাবে আর সফর করতে পারবেন না।

৮৫ বছর বয়সি পোপ হাঁটুর লিগামেন্টের সমস্যায় ভুগছেন। সফরের বেশিরভাগ সময় হুইলচেয়ার ব্যবহার করেছেন তিনি। ওয়াকারের সাহায্যও লেগেছে।যদিও আগে অবসর নেওয়ার কথা বলেননি পোপ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পদত্যাগ করতে চাওয়ার মধ্যে কোনো ভুল নেই।

তার কথায়, এটি অদ্ভুত কোনো ঘটনা নয়। কোনো বিপর্যয় নয়। পোপ বদল করা যায়। আমি মনে করি এই সীমাবদ্ধতা নিয়ে গির্জার সেবা করার জন্য আমাকে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। এর ইতিবাচক দিকটাও ভাবতে হবে।এই বছরের শুরুতে পোপ ফ্রান্সিসের ডান হাঁটুর লিগামেন্টে স্ট্রেইন বসানো হয়। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আফ্রিকায় একটি সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি যেতে পারেননি।

সূত্র: ডয়চে ভেলে ও আল-জাজিরা।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও