মধপ্রাচ্য

আড়াই মাস পর দেশের মাটিতে প্রবাসীর দাফন

963_download (6).jpg

রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, মালয়েশিয়ার হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা প্রবাসী মো. জহিরুল ইসলাম জবুর (৫৫) মরদেহ আড়াই মাস পর ঢাকায় পৌঁছায়। ৩১ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে বিমানবন্দর থেকে মরদেহটি বুঝে নেন জবুর ভাতিজি রোমানা আক্তার।

১ জানুয়ারি জহিরুলের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়। তিনি গাইবান্ধা সদর বিষ্ণুপুর গ্রামের কবির পাড়ার মৃত হোসেন আলী মুন্সির ছেলে। ২৭ বছর আগে চাকরি নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান জবু। তার কোনো স্ত্রী-সন্তান ছিল না। বাবা-মা আগেই মারা গেছেন।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর জন্ডিস ও লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার ইপুহ এলাকার রাজা হাসপাতালে মারা যান। তার মরদেহ দেশে নেওয়ার মতো পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় মর্গে পড়েছিল ১৭ দিন।

২ নভেম্বর ‘টাকার অভাবে হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে প্রবাসীর মরদেহ’ শিরোনামে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। মরদেহ দেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়ার কোনো কমিউনিটি বা সংগঠন এগিয়ে না আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানেই দাফন করার জন্য সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল।

সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর মুহূর্তে মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, লন্ডনস্থ ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশি সংগঠন এবং জনহিতৈষী প্রবাসীরা। জহিরের মরদেহ দেশে পাঠাতে অর্থের যোগানসহ অন্যন্যা সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন মালয়েশিয়া বাংলাদেশ চেম্বারস অ্যান্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুব আলম শাহ।

জহিরের তথ্য ও উপাত্তসহ বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় থেকে ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করেন কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা। মরদেহটি দেশে পাঠাতে নানা জটিলতায় পড়তে হয়েছে প্রবাসী নেতাদের।

প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতেই ২ মাস সময় লেগে গেছে। আর এদিকে জহির মরদেহ মর্গে থাকার পরও পঁচে গলে গেছে। দেশের বাড়িতে নিয়ে দাফনের আগে লাশের মুখ দেখতে পারেনি স্বজনরা। দ্রুত দাফন সম্পন্ন করতে হয়েছে।

মরদেহ দেশে পাঠাতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জহিরের কোনো বৈধ বা ভ্যালিড পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল না। এমনকি মৃত্যুর সময় তার সঙ্গে যে পাসপোর্টের ফটোকপি পাওয়া যায় সেটা ছিল নরসিংদী জেলার অন্য এক ব্যক্তির।

তিনি বলেন, অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারি জহিরের আসল ঠিকানা গাইবান্ধা জেলার সদরে। তার যথাযথ ডকুমেন্টস না থাকার কারণে বাংলাদেশের সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ারেন্স নিতে এতদিন সময় লেগেছে।

এদিকে লন্ডনস্থ ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশি সংগঠন জহিরের পরিবারকে অর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাসও পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি সংগঠনের নেতারা ভার্জুয়ালি আলোচনাও করেছেন।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও