লন্ডন

টিউব ধর্মঘটে লন্ডনবাসীর ভরসা সাইকেল ও বাস

11806_cc187910-8c9f-11f0-b6c9-fd3740fd2112.jpg.jpg

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডের তীব্র সেবা বিঘ্নের কারণে নগরবাসী বিকল্প হিসেবে সাইকেল, বাস ও ব্ল্যাক ক্যাব ব্যবহার করে কর্মস্থলে যাতায়াত করছেন।

বেতন ও কর্মপরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে রেল, মেরিটাইম অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন (RMT) এর সদস্যরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। এর ফলে লন্ডনের বেশিরভাগ টিউব লাইন বন্ধ রয়েছে। যদিও এলিজাবেথ লাইন ও ওভারগ্রাউন্ড চালু আছে, তবে এগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ভিড় হচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (TfL)

সাইকেল ভাড়া সেবা প্রদানকারী কোম্পানি লাইম জানিয়েছে, তাদের ২৫ হাজারেরও বেশি বাইক সড়কে চালু রাখতে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কান তাস জানান, ধর্মঘটের সময় চাহিদা বেড়ে যায়—তাই ব্যাটারি পরিবর্তন, মেরামত এবং ভিড় এলাকায় দ্রুত সাইকেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত দল ও পায়ে হেঁটে টহল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ধর্মঘট ভোগান্তি বাড়িয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। কেন্টের র‌্যামসগেট থেকে প্রতিদিন লন্ডনে যাতায়াতকারী ক্রিস বার্নস বলেন, এবার তার যাত্রা হয়ে যাচ্ছে ছয় ঘণ্টার দীর্ঘ ভ্রমণ। তিনি বলেন, "তাদের প্রতি সহানুভূতি ছিল, কিন্তু এখন আর নেই।"
এনএইচএস কর্মী রেচেল এডওয়ার্ডস মনে করেন, আরএমটি-র ৩২ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহের দাবি বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, "দেশ এমনিতেই সংকটে আছে, এখন আমাদের একসাথে থাকতে হবে, ধর্মঘট নয়।"
অন্য যাত্রী পল ওয়াল্যান্স ধর্মঘটকে "লন্ডনের জীবনের অংশ" হিসেবে বর্ণনা করলেও আশা প্রকাশ করেন দ্রুত সমাধান আসবে।

অন্যদিকে আরএমটি ইউনিয়ন জানায়, তারা জনসাধারণ বা ক্ষুদ্র ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ধর্মঘট করেনি। বরং সদস্যদের ক্লান্তি ও দীর্ঘমেয়াদি শিফটের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে কর্মঘণ্টা সামান্য কমানোর দাবি জানিয়েছে। ইউনিয়নের দাবি, ২০২৩ সালে টিএফএল-এর উদ্বৃত্ত ছিল ১৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড এবং বার্ষিক বাজেট ১০ বিলিয়ন পাউন্ড—সেক্ষেত্রে ৩২ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ বাস্তবায়ন করা ন্যায্য ও সম্ভব।

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড এ দাবি নাকচ করে বলেছে, ৩৫ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৩২ ঘণ্টা করলে "শত শত মিলিয়ন পাউন্ড" অতিরিক্ত ব্যয় হবে, যা অগ্রহণযোগ্য। গ্রাহক কার্যক্রম পরিচালক নিক ডেন্ট ধর্মঘটকে "খুব ক্ষতিকর" বলে উল্লেখ করেছেন।

সরকারও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, "লন্ডনবাসী এ ধরনের ভোগান্তিতে ক্লান্ত। আরএমটি ও টিএফএলকে আলোচনার মাধ্যমে যাত্রীদের স্বার্থে দ্রুত সমাধান খুঁজতে হবে।"
লন্ডনের মেয়রের দপ্তর থেকেও জানানো হয়, এ ধর্মঘট ব্যবসা ও যাত্রীদের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে এবং দুই পক্ষকেই দ্রুত সমঝোতায় আসতে হবে।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও