লন্ডন

পেডিক্যাব চলাচলে কড়াকড়ি: ওয়েস্টমিনস্টারে তাৎক্ষণিক ১০০ পাউন্ড জরিমানা

12530_pedicab-in-london.jpg

লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিল পেডিক্যাব বা রিকশা সদৃশ বাহন পরিচালনায় নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আগামী ১৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার থেকে এসব নিয়ম ভঙ্গ করলে চালকদের তাৎক্ষণিকভাবে ১০০ পাউন্ড জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রিত এই কাউন্সিল জানায়, নতুন জনসমাগম সুরক্ষা আদেশ (Public Spaces Protection Order) কার্যকর হওয়ার পরপরই পুলিশ, কাউন্সিল ইন্সপেক্টর এবং ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের (TfL) কর্মকর্তারা এই জরিমানা আরোপ করতে পারবেন।

নগর কর্তৃপক্ষের মতে, পর্যটনকেন্দ্রিক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পেডিক্যাবের নানা অসংগতি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, পথচারী ও যান চলাচলে বাধা এবং অসদাচরণের অভিযোগ বাড়ছিল। নতুন এই আদেশ তিন বছরের জন্য কার্যকর থাকবে, প্রয়োজনে সমমেয়াদে বাড়ানোও যেতে পারে। বিধিনিষেধ অনুযায়ী, চার বা তার বেশি পেডিক্যাব একসাথে এক স্থানে জড়ো হলে তা জনপথে বাধা হিসেবে গণ্য হবে। পাশাপাশি জনসাধারণকে ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্দিষ্ট স্থান থেকে সরতে অস্বীকৃতি জানালেও আর্থিক জরিমানা গুনতে হবে।

কাউন্সিল জানায়, মূল লাইসেন্সিং বিধিমালা চালুর অপেক্ষায় থাকলেও জনদুর্ভোগ কমাতে সাময়িক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, টিএফএলের পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্সিং ব্যবস্থা ২০২৬ সালের শুরুতে কার্যকর হবে।

পেডিক্যাব পরিচালনায় শৃঙ্খলা আনতে গৃহীত জরিপে অংশ নেওয়া ২০২ জনের মধ্যে ৮৬ শতাংশই এই ব্যবস্থা সমর্থন করেছেন। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিশ্বাস করেন, নতুন বিধিনিষেধ তাদের দৈনন্দিন জীবনে উল্লেখযোগ্য সুফল বয়ে আনবে। তবে ১০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আরও কঠোর ব্যবস্থা, এমনকি পেডিক্যাব সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের দাবি জানান। অন্যদিকে, দু’জন প্রতিক্রিয়া জানান যে টিএফএল লাইসেন্সিং কার্যকর হওয়ার আগে এসব কড়াকড়ি আরোপ অযৌক্তিক।

ওয়েস্টমিনস্টারের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পেডিক্যাব চালকেরা যানজট বাড়ানো, জনপথ দখল এবং কখনো কখনো বিপজ্জনক চালনার মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করছেন। পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে; কাউন্সিলের পরিসংখ্যান বলছে—প্রতি মাইল ২০ থেকে ৭০ পাউন্ড পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হয়।

আইনি অস্পষ্টতাও পরিস্থিতিকে জটিল করেছে। ১৮৬৯ সালের পুরোনো আইনে পেডিক্যাবকে ‘স্টেজ ক্যারেজ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করায় কার্যকর নিয়ন্ত্রণ আরোপে প্রশাসন এতদিন সমস্যায় পড়েছিল।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাউন্সিলর আইশা লেস বলেন, “এটা ওয়েস্টমিনস্টার, ওয়াইল্ড ওয়েস্ট নয়। নিয়ম ভাঙলে চালকদের পকেট হালকা হবেই।” তিনি আরও জানান, টিএফএল-এর সঙ্গে যৌথভাবে স্থায়ী লাইসেন্সিং ব্যবস্থা গঠনের উদ্যোগ চলছে। পাশাপাশি সিটি ইন্সপেক্টররা প্রতিবেশী ল্যামবেথ কাউন্সিল ও মেট্রোপলিটন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পর্যটকদের প্রতারণা রোধে কাজ করছেন।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও