খেলাধুলা

অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

6049_image-228967-1675951342bdjournal.jpg

ফেভারিট হয়েই ফাইনালে নেমেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ জুড়েও শামসুন্নাহার জুনিয়ররা দেখালেন সেই দাপট। শুরুর জড়তা কাটিয়ে প্রথমার্ধেই দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর শেষ দিকে আসে আরেক গোল। নেপালকে কোণঠাসা করে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে আরেকটি ট্রফি ঘরে তুলল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।

বৃহস্পতিবার সাফ নারী অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের হয়ে গোল তিনটি করেন শাহেদা আক্তার রিপা, শামসুন্নাহার ও উন্নতি খাতুন।

দক্ষিণ এশিয়ায় মেয়েদের সিনিয়র ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ঘরে আছে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের শিরোপা। অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়েও এলো সেরা সাফল্য।

পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখানো বাংলাদেশ ফাইনালেও ভুল করেনি। বলের নিয়ন্ত্রণ, সুযোগ কাজে লাগানো আর জমাট রক্ষণ দিয়ে খেলে নজরকাড়া ফুটবল।  

খেলার প্রথম কয়েক মিনিট অবশ্য বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোন দল। ১৮ মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের পাস ধরে শাহেদা আক্তার রিপা বক্সে ক্রস দিয়েছিলেন আকলিমা খাতুনকে। আকলিমার নেওয়া দুর্বল শট ধরতে ভুল হয়নি নেপালের কিপারের। পরের মিনিটে উড়ে আসা আরেকটি বল ভলি করলেও কিপারকে পরাস্ত করতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড।

আক্রমণের এই চাপ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। খানিক পর বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাংলাদেশের প্রান্তে আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল নেপাল। দুই দলের একাধিক খেলোয়াড় আঘাত পেতে থাকলে খেলার গতি হচ্ছিল মন্থর।

৩৬ মিনিটে নেপালে আমিশা কারকির নেওয়া শট জমাট রক্ষণে বাধাগ্রস্ত করে বাংলাদেশ।  ৩৮ মিনিটে ডান দিক দিয়ে বল পেয়ে রিপার নেওয়া শট অল্পের জন্য যায় বাইরে দিয়ে।

৪২ মিনিটে গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। বক্সে বল নিয়ে ঢুকে যাওয়া আকলিমাকে আটকে দিলেও নেপালের ডিফেন্ডাররা বল ক্লিয়ার করতে না পারলে বক্সের সামনে তা পেয়ে যান রিপা। গোলরক্ষককে একটু সামনে থাকতে দেখে তার মাথার উপর দিয়ে নেন শট। বাঁকানো শটটি জালে আশ্রয় নিলে উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।

তিন মিনিট পরই আসে দ্বিতীয় গোল। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে যান অধিনায়ক শামসুন্নাহার জুনিয়র। ছুটে গিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে টোকা মেরে জড়িয়ে দেন জালে।  

বিরতির পর খেলায় ফিরতি মরিয়ে নেপাল সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে ৫০ মিনিটে। ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে একজনকে কাটিয়ে দারুণ পাস দিয়েছিলেন আমিশা। সুনকালা রাই ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকলেও ঠিকমতো শট নিতে পারেননি।

এরপরের কয়েক মিনিট রক্ষণ আরও জমাট করে ফেলে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রতিপক্ষের আক্রমণের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে সময় পার করে দিতে থাকে তারা।

নেপাল অলআউট আক্রমণে উঠলে বাংলাদেশের প্রতি আক্রমণে সুযোগ মিলছিল। ৭৩ মিনিটে রিপা তেমন এক পরিস্থিতিতে পেয়ে যেতে পারতেন তার দ্বিতীয় গোল। মাঝ মাঠ থেকে বলের যোগান পেয়ে দূরপাল্লার শট নিয়েছিলেন তিনি। অল্পের জন্য তা দূরের পোস্টের বাইরে যায়।  ৭৯ মিনিটে আরেক সুযোগ পেয়েছিলেন দলের অন্যতম সেরা তারকা শামসুন্নাহার জুনিয়র। তবে ছুটে যাওয়া শামসুন্নাহারকে এবার হতাশ করেন নেপালের কিপার।

পরের মিনিটেই বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা চাকমা দেখান তার ঝলক। বক্সে ঢুকে আমিশার নেওয়া শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা হওয়া এই কিপার।

৮৭ মিনিটে নেপালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয় বাংলাদেশ। শামসুন্নাহারকে বক্সের বাইরে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। রিপার নেওয়া দারুণ ফ্রি কিক থেকে মাথা স্পর্শ করে দলকে তৃতীয় গোল পাইয়ে দেন উন্নতি খাতুন। এরপর খেলায় ফেরার আর কোন অবস্থা ছিল না নেপালের।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও