ব্রিটেনে বড়দিনের সরকারি ছুটিতে ছোট-বড় সব দোকান বন্ধ থাকে। এ সময় বাস, ট্রেনসহ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলাচলও থাকে একেবারে সীমিত।
বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাংক-বিমাসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে যারা কাজ করেন, এ দিনটিতে তারা ক্রিসমাসের ছুটিকে উপলক্ষ করে ঘরে স্বজন-বন্ধুদের নিয়ে গেটটুগেদার বা পুনর্মিলনীর আয়োজন করেন। কারণ বাংলাদেশিসহ ব্রিটেনের মুসলমানরা ঈদে এ দেশে ছুটি না পেলেও, ক্রিসমাসে ছুটি পান। সন্তানদের বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনেকে ছুটি কাটাতে যান দেশের বাইরে।
তবু দেশটিতে বসবাসরত ১৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশির সিংহভাগই ছুটে যান কর্মস্থলে।
ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের ট্রেজারার মাহবুবুল করীম সুয়েদ শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ক্রিসমাসসহ পাবলিক হলিডের দিনগুলোয় বাস-ট্রেন চলাচল সীমিত থাকায় ট্যাক্সির ভাড়া (বেস ফেয়ার) বেশি থাকে। বাংলাদেশি কমিউনিটির লক্ষাধিক মানুষ ব্রিটেনে ট্যাক্সি চালান। ভাড়া বেশি মেলায় সিংহভাগই কাজে যান।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া কেয়ার ও হসপিটালিটি সেক্টরে যারা কাজ করেন, তারা ক্রিসমাসের মতো পাবলিক হলিডের দিনে কাজ করলে ওই দিনের জন্য বেশি মজুরি ও অন্য এক দিন ছুটি পান। এ জন্য এসব খাতে কর্মরত বাংলাদেশিদের ক্রিসমাসের দিনে কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের বড় অংশই বড়দিনে কাজে যান নিজের সুবিধামতো অন্য একটি দিনে ছুটি নেওয়ার প্রয়োজনে।
ব্রিটেনের কেয়ার ও হসপিটালিটি সেক্টরে কর্মরত বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জানান, অনেকে ক্রিসমাসের দিনে কাজে গিয়ে তার পরের দিন বক্সিং ডের দিনে ছুটি নেন। কারণ বক্সিং ডের দিনে দেশটিতে সব ধরনের পণ্যে বছরের মধ্যে সর্ববৃহৎ ছাড় দেন বিক্রেতারা। অনেকে দিনটিতে ছুটি নিয়ে শপিং করেন।
ব্রিটেনের সমকালীন রাজনীতির বিশ্লেষক নুরুর রহিম নোমান বলেন, ক্রিসমাস এখন যতটা ধর্মীয়, তার চেয়ে অনেক বেশি সামাজিক উৎসব। মূলধারার প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের ক্রিসমাস গিফট, বোনাস দেয়। বেশির ভাগ ইংলিশ রেস্টুরেন্ট ক্রিসমাসে বন্ধ থাকলেও, বাংলাদেশি রেস্তোরাঁগুলো খোলা থাকায় বাংলাদেশি কর্মীরা কাজে যান। বড়দিনের ছুটিতে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা কাজে না আসায় এ দিনটিতে খোলা থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত মুসলমান ও হিন্দু ধর্মের কর্মীদের ওপর ভরসা রেখেই চলে।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন