খেলাধুলা

অবশেষে ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে সৌদি আরবের

1072_download (3).jpg

২০১৯ সালে হঠাৎ স্প্যানিশ সুপার কাপের ধরন পাল্টে ফেলার ঘোষণা দেয় দেশটির ফুটবল ফেডারেশন। স্পেনের লা লিগা চ্যাম্পিয়ন ও কোপা দেল রে বিজয়ীর মধ্যে এই ম্যাচের সূচি ও স্থান বদলে ফেলা হয়। সাধারণ মৌসুমের শুরুতে অর্থাৎ আগস্টে হওয়া এই ম্যাচ নিয়ে যাওয়া হয় জানুয়ারিতে। আর দুই ক্লাবের দুই স্টেডিয়ামের বদলে ভেন্যু নিয়ে যাওয়া হয় সৌদি আরবে!

ফরম্যাট বদলে দুই দলের বদলে চার দলের টুর্নামেন্টও বানিয়ে ফেলা হয় সুপার কাপকে। এর পেছনে আর্থিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। ছিল আরেকটি কারণও। সৌদি আরবে প্রথমবারের মতো রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাকে মুখোমুখি করার সুযোগ সৃষ্টি করা। ইউরোপের বাইরে প্রথম এল ক্লাসিকো দেখার সে স্বপ্ন অবশ্য ২০২০ সালে পূরণ হয়নি সৌদি আরবের ফুটবল ফেডারেশনের। রিয়াল ফাইনালে উঠলেও বার্সেলোনা বাদ পড়েছিল সেমিতে। ২০২২ সালে এসে সে ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের। ১২ জানুয়ারি সৌদি আরবে হবে ২০২২ সালের প্রথম ‘এল ক্লাসিকো’।

২০২১ সালের কোপা দেল রে জয়ী বার্সেলোনা ও ২০২১ লিগের দ্বিতীয় দল রিয়াল মাদ্রিদ মুখোমুখি হবে ১২ জানুয়ারির প্রথম সেমিফাইনালে। ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দেখা হবে লা লিগা বিজয়ী আতলেতিকো মাদ্রিদ ও কোপা দেল রে রানার্সআপ অ্যাথলেটিক বিলবাওর।

এ ম্যাচ উপলক্ষে এরই মধ্যে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ দল ঘোষণা করেছে। এ ম্যাচের জন্য ২৪ জনের দল নিয়ে সৌদি আরবে উড়াল দিয়েছে বার্সেলোনা। সদ্য অস্ত্রোপচার করা রোনালদো আরাউহো এবং চোট থেকে ফেরা আনসু ফাতিও আছেন স্কোয়াডে। আজই নিবন্ধিত হওয়া ফেরান তোরেস ও পেদ্রি অবশ্য করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় থাকছেন না দলে। ওদিকে রিয়ালেও চোট কাটিয়ে ফিরেছেন দানি কারভাহাল। তবে নতুন করে চোট পাওয়ায় গ্যারেথ বেল ও মারিয়ানো ছিটকে গেছেন এ ম্যাচ থেকে।

স্প্যানিশ ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই ম্যাচ নিয়ে এরই মধ্যে দুই দল বেশ আগ্রহের জন্ম দিচ্ছে। তবে এ ম্যাচ নিয়ে সবচেয়ে বেশি উৎসাহী সৌদি আরবের ফুটবল ফেডারেশন। ২০১৯ সালে স্প্যানিশ ফেডারেশনের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে সৌদি আরব। তিন বছরের জন্য স্প্যানিশ সুপার কাপ আয়োজনের জন্য স্প্যানিশ ফেডারেশনকে ১২ কোটি ইউরো দিয়েছে সৌদি আরব। বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের মতো দলগুলো যেন নিজে দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে যেতে রাজি হয়, তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আগে শুধুই মর্যাদার এক ট্রফিতে এখন অর্থমূল্য হিসেবে ১ কোটি ৪০ লাখ ইউরো পাচ্ছে বিজয়ী দল।

এভাবে অন্য দেশের প্রতিযোগিতা সৌদি আরবে টেনে নেওয়ার পেছনে সৌদি আরবের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক। দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থা। তাদের দাবি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নারীর প্রতি বৈষম্যের অভিযোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে ফুটবলকে ব্যবহার করছে সৌদি আরব। ২০২০ সালের সুপার কাপে মাঠে নারীদের খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার কাজটা করে নিয়েছিল সৌদি আরব।

মাঠের উদ্দেশ্য অবশ্য পূরণ হয়নি সৌদি আরবের। প্রথমবার রিয়াল মাদ্রিদ ফাইনালে উঠলেও বার্সেলোনা হেরে গিয়েছিল সেমিফাইনালে। ফলে আগের সংস্করণগুলোর নিয়মে যাদের সুপার কাপ খেলারই কথা না, সে দুই দল ফাইনাল খেলতে নেমেছিল জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল রিয়াল। গতবার তো করোনার কারণে, সৌদি আরবেই আয়োজিত হয়নি সুপার কাপ। সেবার বার্সেলোনা ফাইনালে উঠলেও রিয়াল হেরে বসেছিল বিলবাওর কাছে। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিলবাও।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও