উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের ব্রেন্টে একটি বাড়িতে আগুন লেগে একজন মা এবং তার তিন সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।

স্টোনব্রিজের টিলেট ক্লোজে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে জরুরি পরিষেবাগুলিকে রাত ১:২০ মিনিটে ফোন করা হয়, যেখানে তারা নিহতদের খুঁজে পায় – ৪৩ বছর বয়সী এক মহিলা, ১৫ বছর বয়সী এক মেয়ে এবং আট এবং চার বছর বয়সী দুই ছেলে। আগুনে দুটি ছাদযুক্ত তিন তলা বাড়ি পুড়ে গেছে।

মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, খুনের সন্দেহে ৪১ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে সম্পত্তির বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, নিহত চারজনের সাথে একই পরিবারের আরেকজন ৭০ বছর বয়সী এক মহিলা এবং এক কিশোরী মেয়েকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা প্রকাশ করা হয়নি।

‘অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা’
শনিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে, সুপারিন্টেন্ডেন্ট স্টিভ অ্যালেন বলেছেন যে নিহত মহিলা তিন সন্তানের মা বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আগুন নেভানোর জন্য ওয়েম্বলি, পার্ক রয়েল এবং উইলসডেনের স্টেশন থেকে আটটি দমকল ইঞ্জিন এবং প্রায় ৭০ জন দমকলকর্মীকে পাঠানো হয়েছিল।

একজন মহিলা, যিনি বলেছিলেন যে পরিবারটি ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যে চলে এসেছিল, তিনি বিবিসিকে বলেছেন যে তিনি ভাঙচুর এবং চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন এবং তারপর বাইরে গিয়ে দেখেন পাশের ভবনটিতে আগুন লেগেছে।

টিলেট ক্লোজে বসবাসকারী ৩৮ বছর বয়সী শিক্ষক মোহাম্মদ লাবিদি বলেছেন যে তিনি “এখনও বাড়ির দিকে তাকাতে পারছেন না”।

পিএ সংবাদ সংস্থার সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন যে তিনি মারা যাওয়া মহিলাকে চিনতেন এবং পরিবারটি “সত্যিই ভালো মানুষ” ছিল।

“আমরা একসাথে মেলামেশা করতাম,” তিনি বলেছিলেন।

আরেক প্রতিবেশী সিসিলিয়া মার্কুইস বলেন, আগুনের ভয়াবহতা দেখে তিনি “স্তম্ভিত”।

“এটি একটি ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। আমি কেবল অসাড় বোধ করছি,” ৬০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা আরও বলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা বলেন: “এটি আমাদের এবং পাড়ার জন্য খুবই কষ্টের সময়।

“আমরা সবাই একসাথে বড় হয়েছি। আমরা সবাই ২৫, ৩০ বছর ধরে এই বাড়িতে বাস করছি। সবাই সবাইকে চেনে।

“এটি একটি খুব বড় আগুন ছিল। আগুন জ্বলছিল। এটি অবিরাম ছিল। এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক সময়।”

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড (LFB) এক বিবৃতিতে বলেছে: “শ্বাসযন্ত্র পরা কর্মীরা একটি সম্পত্তির দ্বিতীয় তলা থেকে একজন মহিলা এবং একটি শিশুকে উদ্ধার করে এবং তাৎক্ষণিক জরুরি সেবা প্রদান করে।

“হেলিকপ্টার ইমার্জেন্সি সার্ভিসেস (HEMS) টিম ঘটনাস্থলেই উভয়কেই দুঃখজনকভাবে মৃত ঘোষণা করে।

“দমকলকর্মীরা অগ্নিনির্বাপণ অভিযান চালানোর সময় সম্পত্তির ভেতরে আরও দুটি শিশুকে পাওয়া যায় এবং ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়।”

উত্তর-পশ্চিম লন্ডনে মেট্রোপলিটন পুলিশের স্থানীয় পুলিশ দলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অ্যালেন বলেছেন: “এটি একটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা এবং আমাদের সমবেদনা জড়িত সকলের সাথে… আমরা আগুনের কারণ নির্ধারণের জন্য লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের তদন্তকারীদের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

ব্রেন্ট কাউন্সিলের নেতা মুহাম্মদ বাট এক বিবৃতিতে বলেছেন: “এই ভয়াবহ ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা, চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা।

“কাউন্সিল কাছাকাছি একটি বিশ্রাম কেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং একটি নিবেদিতপ্রাণ দল যেসব পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল তাদের দেখাশোনা করছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা অব্যাহত রাখব।

“আমরা লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড এবং মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি যখন তারা আগুনের কারণ অনুসন্ধান করছে এবং তাদের পূর্ণ সমর্থন এবং সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখব।”

লন্ডনের মেয়র স্যার সাদিক খান X-এ পোস্ট করেছেন: “এটি একটি ভয়াবহ খবর এবং আমার সমবেদনা চারজনের পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের সাথে যারা দুঃখজনকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”