প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার লেবার দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তিনজন এমপিকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছেন। বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, নীল ডানকান-জর্ডান, ব্রায়ান লিশম্যান এবং ক্রিস হিঞ্চলিফের ওপর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। দলীয় হুইপ প্রত্যাহার করায় তারা এখন থেকে হাউস অব কমন্সে স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এই তিনজনই ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো লেবার পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যদিও এখনও স্পষ্ট নয় যে ঠিক কী কারণে তাদের হুইপ প্রত্যাহার করা হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে সরকারের কল্যাণভাতা সংস্কার বিলের বিপক্ষে ভোট দেওয়াই এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ।
সরকারের প্রস্তাবিত কল্যাণ সংস্কার বিলের বিরুদ্ধে লেবার দলের ৪৭ জন এমপি বিদ্রোহ করেন, যার ফলে সরকার বাধ্য হয় বিলের কিছু অংশে পরিবর্তন আনতে। এই বিদ্রোহ স্যার কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বকে বড়ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন তিনি ইতিমধ্যে নীতিগত বেশ কয়েকটি পরিবর্তনের কারণে চাপের মুখে ছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল শীতকালীন জ্বালানি ভাতা পুনর্বহাল করা।
পুলের এমপি নীল ডানকান-জর্ডান সরকারকে উদ্দেশ্য করে একটি খোলা চিঠির আয়োজন করেছিলেন, যেখানে কল্যাণ পরিবর্তনগুলোকে "সমর্থন করার অযোগ্য" বলে মন্তব্য করা হয়। তিনি এক বিবৃতিতে জানান, "নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমি আমার এলাকার মানুষের পক্ষে কথা বলেছি, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী ভাতার কাটা নিয়ে। আমি জানতাম এর জন্য মূল্য দিতে হতে পারে, তবে আমি প্রতিবন্ধীদের আরও দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারতাম না।"
অলোয়া ও গ্র্যাঙ্গেমাউথের এমপি ব্রায়ান লিশম্যানও সরকারের কল্যাণ সংস্কারের একজন কট্টর সমালোচক ছিলেন। তিনি বলেন, "আমি একজন গর্বিত লেবার সদস্য এবং এখনও দলের প্রতি অনুগত। আমি লেবার এমপি হিসেবেই থাকতে চাই এবং দেশের মানুষ যে পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে, তা বাস্তবায়ন করতে চাই। আমি জনগণের সেবা করতেই সংসদে এসেছি, তাদের আরও দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে নয়।"
ক্রিস হিঞ্চলিফের পক্ষ থেকেও এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি, তবে ধারণা করা হচ্ছে তিনিও একই ধরনের অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।
লেবার পার্টির শীর্ষস্থানীয় সূত্রমতে, আরও কয়েকজন এমপির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এতে বোঝা যাচ্ছে, পার্টির ভেতরে নীতিগত ঐকমত্যের অভাব এবং স্টারমারের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন এখনও কাটেনি।