আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজা বলেছেন, শুধু গোপালগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন নয়, আমি মনে করি— আশপাশের চারটা জেলার মধ্যে ভাগ করে দিলে ভালো হয়। বিশেষ করে নড়াইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও বরিশাল এই চারটা জেলার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হোক।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) কুষ্টিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এ প্রস্তাব দেন তিনি। গত বুধবার গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ করে দলটি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা নায়েবে আমির মো. আব্দুল গফুর, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজা উদ্দিনসহ অনেকে।
আমির হামজা বলেন, এই জেলা মানচিত্রে না থাকাই ভালো। এটা একটা অভিশপ্ত জেলা। অভিশপ্ত জেলাকে বাংলার মানচিত্র থেকে মুছে ৬৩ জেলায় বাংলাদেশ করা হোক। তিনটি আসন তিন জেলায় ভাগ করে দিলেই তো এই জেলা শেষ হয়ে যায় বলে মত দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা মানে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপরে হামলা। সুতরাং যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া লাগবে। আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি, সময় কিন্তু পার হয়ে যাচ্ছে। এরপরও যদি তাদের শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে আমরা ধরে নিব, যারা গোপালগঞ্জ জেলার দায়িত্বে আছে, তারা এর সঙ্গে জড়িত।
সমাবেশে জেলা জামায়াত নেতারা বলেন, অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে গোপালগঞ্জের নতুন নাম রাখতে হবে। এ ছাড়া, গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার এ ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।
এদিকে, এ ঘটনায় ৭৫ জনকে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আরও ৪০০ জনকে।
পুলিশের পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) মধ্যরাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এনসিপির কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভাঙচুর, হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পুরো গোপালগঞ্জজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এর আগে, গত বুধবারের (১৬ জুলাই) ওই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন নিহত হন। তারা হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের কোটালীপাড়ার হরিণাহাটি গ্রামের কামরুল কাজীর ছেলে রমজান কাজী (১৯), শানাপাড়ার সোহেল রানা (৩৫), উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (৩০), সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন তালুকদার (২৪) ও রমজান মুন্সী (৩২)।
পরবর্তীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্ধ্যায় জারি করা হয় কারফিউ।