লন্ডনে আজ সোমবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে ব্যাপক টিউব ধর্মঘট, যা রাজধানীর যাতায়াত ব্যবস্থাকে কার্যত অচল করে দিয়েছে। রেল, মেরিটাইম অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন (আরএমটি)-এর সদস্যরা রবিবার রাত থেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এই ধর্মঘট চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
টিউবের বেকারলু, সেন্ট্রাল, সার্কেল, ডিস্ট্রিক্ট, হ্যামারস্মিথ অ্যান্ড সিটি, জুবিলি, মেট্রোপলিটন, নর্দার্ন, পিকাডিলি, ভিক্টোরিয়া এবং ওয়াটারলু অ্যান্ড সিটি—সবগুলো লাইন বন্ধ রয়েছে। ডিএলআর আংশিক চালু থাকলেও ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (টিএফএল) জানিয়েছে, অন্যান্য লাইনগুলোতে ভালো সেবা থাকছে।
তবে, এলিজাবেথ লাইনে ভ্রমণ করা সম্ভব হবে এবং এই সুযোগে অনেক যাত্রী বিকল্প হিসেবে এলিজাবেথ লাইন ও লন্ডন বাসে ভিড় করছেন। এতে বাস ও এলিজাবেথ লাইনে অস্বাভাবিক ভিড় দেখা যাচ্ছে। টিএফএল জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ ভোগান্তি চলতে পারে।
ধর্মঘটের মূল কারণ আরএমটি ও টিএফএল-এর মধ্যে আলোচনার ভাঙন। আরএমটির নতুন নেতা এডি ডেম্পসি দাবি তুলেছেন— টিউব কর্মীদের জন্য সপ্তাহে মাত্র ৩২ ঘণ্টা কাজ এবং চারদিন কর্মসপ্তাহ চালুর। একইসঙ্গে তিনি জাতীয় পর্যায়ে ট্রেন ভাড়ায় ৭৫ শতাংশ ছাড় দাবি করেছেন। এই দাবিগুলো পূরণে প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড অতিরিক্ত খরচ হবে বলে টিএফএল জানিয়েছে।
লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডের গ্রাহক কার্যক্রম পরিচালক নিক ডেন্ট বলেছেন, "৩৫ ঘণ্টা থেকে সপ্তাহে কমিয়ে ৩২ ঘণ্টা করা একেবারেই অযৌক্তিক। এতে কয়েকশো মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হবে।"
অন্যদিকে কনজারভেটিভ নেতারা এই ধর্মঘটের জন্য লেবার পার্টিকে দায়ী করছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ইউনিয়নের চাপের কাছে নতি স্বীকার করছেন।
ধর্মঘটের পর আরএমটি এক বিবৃতিতে জানায়:
“আমরা দীর্ঘদিন ধরে চারদিনের কর্মসপ্তাহ এবং ৩২ ঘণ্টার কাজের দাবি করে আসছি। এতে কর্মীদের ক্লান্তি কমবে, স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি অন্যান্য রেলকর্মীরা যেমন ভাড়া ছাড় পান, আমরাও তা চাইছি। টিএফএল-এর খরচের হিসাব অযৌক্তিক, কারণ সংস্থাটি গত বছরেই ১৬৬ মিলিয়ন পাউন্ড উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে।”
আরএমটি আরও জানায়, বর্তমানে আন্ডারগ্রাউন্ডে ২০১৮ সালের তুলনায় দুই হাজার কম কর্মী রয়েছেন, যা বাকি কর্মীদের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। তারা আলোচনার জন্য এখনও প্রস্তুত এবং মেয়র সাদিক খানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।