বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শু বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ফারিয়া ইয়াসমিন। কোম্পানির ৬৩ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো নারী প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদে দায়িত্ব পাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবেও বাটার এমডির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশের শীর্ষ পদে এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগামী মাসে ফারিয়া ইয়াসমিন নতুন এমডি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। তিনি বর্তমান এমডি দেবব্রত মুখার্জির স্থলাভিষিক্ত হবেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেবব্রত মুখার্জি আগামী ২০ নভেম্বর বাটা শু বাংলাদেশের এমডির দায়িত্ব ছেড়ে ভারতের একটি বহুজাতিক কোম্পানির এমডি হিসেবে যোগ দেবেন। তার স্থলেই আসছেন ফারিয়া ইয়াসমিন I শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে বাটা শু সোমবার (১৩ অক্টোবর) তাদের শীর্ষ পর্যায়ে এই পরিবর্তনের তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানায়। পরে সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটি সংবাদমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফারিয়া ইয়াসমিনের বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় ব্র্যান্ড মার্কেটিং, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট এবং ব্যবসা পরিচালনায় ২৩ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাটা শুর এমডি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এসিআইয়ের প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা (চিফ বিজনেস অফিসার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।ফারিয়া এর আগে রেকিট বেনকিজার, ম্যারিকো এবং নেসলের মতো বহুজাতিক কোম্পানিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।
বাটা শু বাংলাদেশের একটি শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, ফারিয়া ইয়াসমিন হতে যাচ্ছেন কোম্পানিটির এ দেশের প্রথম নারী এমডি এবং স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম বাংলাদেশি এমডি। স্বাধীনতার আগে অবশ্য আরও এক বাংলাদেশি বাটা শুর শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে তখন সে পদটি এমডি পদবিতে ছিল না।
১৯৬২ সালে বাটা শু বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে এবং ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির টঙ্গী ও ধামরাইয়ে দুটি কারখানা রয়েছে, যেগুলোর দৈনিক উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার জোড়া জুতা। বছরে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় তিন কোটি জোড়া জুতা বিক্রি করে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) বাটা শু ৫১৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে এবং ২৭ কোটি টাকার বেশি মুনাফা অর্জন করেছে। ২০২৪ সালের শেষে কোম্পানিটির ৭০ শতাংশ শেয়ার ছিল বিদেশি উদ্যোক্তাদের হাতে, ১৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে, ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে এবং ১ দশমিক ৩০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীর হাতে।