যুক্তরাজ্য

১২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১১
আরও খবর

ব্রিটেনে ৪ মিলিয়ন মানুষ কাজ না করেই বেনিফিট ভোগ করছেন

12649_16366297940642.jpg

ব্রিটেনে বর্তমানে প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ বেকার ভাতা নিচ্ছেন, যাদের কাজ খোঁজার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই; এমনটাই জানিয়েছে সর্বশেষ সরকারি তথ্য। লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই সংখ্যাটি এক মিলিয়নেরও বেশি বেড়েছে।

কর্ম ও পেনশন বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস - DWP) প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে রেকর্ডসংখ্যক ৮.৩ মিলিয়ন মানুষ ইউনিভার্সাল ক্রেডিট (ইউসি) পাচ্ছেন, যা গত বছরের তুলনায় এক মিলিয়নেরও বেশি বৃদ্ধি। এই সংখ্যা যুক্তরাজ্যের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমান।

এছাড়া দেখা গেছে, দেশটিতে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট ভাতাপ্রাপ্ত বিদেশে জন্মগ্রহণকারী মানুষের সংখ্যাও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, মোট ১.২৪ মিলিয়ন, যা প্রায় লিডস ও শেফিল্ড শহরের মোট জনসংখ্যার সমান।

ডিডব্লিউপি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কাজের কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়া ভাতাপ্রাপ্তদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। শুধু সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যেই নতুন ভাতাপ্রাপ্তের সংখ্যা ১,৫৯,৬৫৪ জন বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২০ সালের জুনের পর সবচেয়ে বড় মাসিক বৃদ্ধি।

বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস বিষয়ক মুখপাত্র হেলেন হোয়াটলি এই সংখ্যাকে “চমকপ্রদ” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন কাজের কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই ভাতা পাচ্ছেন, যাদের অনেকেই কাজ করতে সক্ষম এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারতেন। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার দেশের প্রয়োজনীয় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছেন। কল্যাণ সংস্কারের ক্ষেত্রেও তিনি পিছিয়ে গেছেন, এবং এখন দুই-সন্তান ভাতা সীমা নিয়েও নতি স্বীকার করতে যাচ্ছেন।”

হোয়াটলি আরও বলেন, “এটাই ক্লাসিক লেবার, বড় পরিবারের জন্য বেশি ভাতা দিয়ে কঠোর পরিশ্রমী করদাতাদের পকেট থেকে অর্থ নিয়ে নেওয়া।”

বাজেট দপ্তর (Office for Budget Responsibility) জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাজ্য সরকার কল্যাণ খাতে ৩১৩ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করবে, যা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ১০.৯ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এই ব্যয় বাড়তে বাড়তে ৩৭৩ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই দ্রুত বৃদ্ধির ফলে পুরো ভাতা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। চলতি বছরের শুরুতে সরকারের ভাতা ব্যয় কমানোর প্রস্তাব লেবার দলের ভেতর থেকেই প্রতিবাদের মুখে পড়ে স্থগিত রাখতে হয়।

তবে ডিডব্লিউপি মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ইউনিভার্সাল ক্রেডিট পাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে কারণ আমরা পুরনো ভাতা ব্যবস্থাগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ করে প্রতিমাসে হাজার হাজার মানুষকে নতুন ব্যবস্থায় আনছি। আমরা আরও বেশি মানুষকে কর্মসংস্থানে ফিরিয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এজন্যই আমরা ‘গেট ব্রিটেন ওয়ার্কিং’ পরিকল্পনাকে আরও জোরদার করছি, যা প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী কর্মসংস্থান সংস্কার।”

সর্বাধিক পঠিত


আরও খবর
ভিডিও