বাংলাদেশ

১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতকারীএহসান গ্রুপ নিয়ে কুয়াকাটা হুজুরের মন্তব্য, ভিডিও ভাইরাল

বিখ্যাত ওয়ায়েজ কুয়াকাটার মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিকের ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলের একটি ভিডিওক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে এহসান গ্রুপের কর্মকাণ্ড নিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে এই আলেমকে।

সম্প্রতি মাহফিলটি হয়েছিল এহসান গ্রুপ পিরোজপুরের উদ্যোগে।

ভিডিওক্লিপটি ভাইরাল করে নেটিজেনরা এ ইসলামী বক্তার সমালোচনা করেছেন। অনেকে আবার বিষয়টিতে খারাপ কিছু দেখছেন না।

সম্প্রতি ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এহসান গ্রুপ পিরোজপুর-বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। সুদবিহীন ‘শরিয়তসম্মত’ ব্যবসার নামে বিপুল গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান এবং তার এক সহযোগীকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

শুক্রবার সকালে এক বার্তায় র‌্যাব বলেছে— ব্যবসার নামে বিভিন্নভাবে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন এই রাগীব হাসান।

এর আগেই কুয়াকাটার আলোচিত এই মাওলানা এমন গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করেছিলেন। যা এ মুহূর্তে নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। অনেককেই বিস্মিত করেছে বিষয়টি।

তবে অনেকেই এই আলেমের পক্ষে কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কথা মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিক জানতেন না। তিনি ওই গ্রুপের উদ্যোগে হওয়া সামাজিক ্ও  ধর্মীয় কাজের প্রশংসা করেছিলেন। ব্যবসার নামে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগটি ওই মাহফিলের আগে উঠলে হয়তো তিনি তাদের দাওয়াত গ্রহণ করতেন না। শুধু  হাফিজুর রহমান নন, ওই মাহফিলে দেশবরেণ্য আরো অনেক আলেম অংশ নিয়েছিলেন। তাদেরকে নিয়ে তো সমালোচনা হচ্ছে না।

মূলত মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে নিয়ে তীর্যক সব মন্তব্যের কারণ ওই মাহফিলে বলা তার কিছু মন্তব্য।

মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান সিদ্দিককে সেখানে বলতে শোনা গেছে, ‘জনসাধারণের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান এই ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর-বাংলাদেশ’। এহসান গ্রুপ নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই। এরপরও অনেকে (এহসান গ্রুপ) নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করবে। তাদের মন্তব্য নিয়ে আমরা সময় নষ্ট করতে রাজি না।’

এহসান গ্রুপের সুদবিহীন ‘শরিয়তসম্মত’ ব্যবসার প্রসঙ্গটি তোলেন হাফিজুর রহমান সিদ্দিক। বলেন, ‘গুনাহের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হচ্ছে সুদ খাওয়া। আল্লাহ আমাদের এই গুনাহ থেকে হেফাজত করুন। আর এই গুনাহ থেকে হেফাজতের জন্য আমার বন্ধু মুফতি রাগীব আহসান এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। এহসান গ্রুপ শুধু পিরোজপুরের জন্য নয়, গোটা জগতের জন্য রহমত।’

এ ওয়ায়েজ আরো বলেন, ‘আমি নিজে এহসান পরিবারের একজন সদস্য, আলহামদুলিল্লাহ।’

উল্লেখ্য, এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান নূরে মদিনা ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।  একসময় তিনি মসজিদের ইমাম ছিলেন। বাড়ি পিরোজপুর সদরের খলিশাখালী এলাকায়। তিনি একটা সময় এমএলএম ব্যবসা শুরু করেন এবং ২০১০ সালে এহসান রিয়েল অ্যাস্টেট নামে একটি কোম্পানি খোলেন।  পরে আরও ডজনখানেক কোম্পানি খুলে তিনি নাম দেন ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর-বাংলাদেশ’ ।

এই গ্রুপের অধীনে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডসহ কয়েকটি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়েছে এর আগে।

চলতি বছরের শুরুতে গণমাধ্যমে খবর আসে— মাসে মাসে ভালো মুনাফার লোভ দেখিয়ে পিরোজপুর ও আশপাশের জেলার কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের পর ওই গ্রুপের কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়ে গেছেন। এর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে শুরু করে। পরিপ্রেক্ষিতের তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও