বাণিজ্য ও অর্থনীতি

অর্থ সংকটে বন্ধ হয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক

6143_image-653419-1678514312.jpg

প্রযুক্তিনির্ভর নতুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ‘সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক’ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার অব্যবস্থাপনায় মূলধন একেবারেই কমে যাওয়ায় ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন (এফডিআইসি)।

ব্যাংকটির এই অবস্থার মূল কারণ গুজব। বুধবার হঠাৎ চাউর হয়ে যায়, গুরুতর আর্থিক ঘাটতিতে ভুগছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। ঘাটতির পরিমাণ এতটাই যে, ব্যাংকের ব্যালান্স শিটের কিনারা করতেই প্রয়োজন অন্তত ২২৫ কোটি ডলার।

এই গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর এসভিপি থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক পড়ে যায়। বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত হাজার হাজার গ্রাহক নিজেদের ব্যাংক হিসাব খালি করে টাকা তুলে নেন এসভিপি থেকে।

ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার এসভিপির সবগুলো শাখায় মোট ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ ছিল। কিন্তু গ্রাহকদের প্রায় সবাই টাকা তুলে নেওয়ার পর এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র ৯৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক, শুরুতে এটির নাম ছিল ক্যালিফোর্নিয়া ব্যাংক। যাত্রা শুরুর পর গত দশকে ব্যাংকটির বিস্তার ঘটে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও বাইরের বিভিন্ন দেশে ৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি কর্মী আছে এসভিবির। এই কর্মীদের অধিকাংশই অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শাখার।

২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক মন্দা শুরু হয়েছিল। সে সময় দেশটির ছোট-বড় অনেক ব্যাংক একের পর এক দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল।

সেই মন্দা পরিস্থিতির ১৫ বছর পর এই প্রথম শীর্ষস্থানীয় কোনো ব্যাংকের এমন আকস্মিক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল যুক্তরাষ্ট্রে। একই সঙ্গে এটি দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক ধসের ঘটনা।

বর্তমান পরিস্থিতিতে এসভিবির এভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া অবশ্য মার্কিন অর্থনীতির জন্য অশুভ সংকেত। কারণ গত বছর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে লাগামহীন ভাবে বাড়ছে ডলারের মান। ফলে ব্যাপক মূল্যস্ফীতি শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ঋণের বিপরীতে সুদের হার বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম।

যদি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে রীতিমতো বিশৃঙ্খলা শুরু হওয়ার শঙ্কা আছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও