বর্তমানে আলোচনা-সমালোচনায় রয়েছে রাজ-পরীমণির দাম্পত্য জীবনের টানাপড়েন। ফেসবুকে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল ইস্যুতে তর্ক-বিতর্ক যেন থামছেই না। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করায় নির্মাতা দীপংকর দীপনের ওপরে ভীষণ চটেছিলেন পরীমণি। এবার অভিনেত্রীকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন দীপংকর।

মঙ্গলবার (৬ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই নির্মাতা।

পাঠকদের জন্য দীপংকরের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

ও জীবনরে জীবন, ছাইড়া না যাও মোরে, তুই জীবন ছাইড়া গেলে আদর করবে কে আমারে।

পরী, জীবন আসলেই খুব দামী, খুব আদরের। তাই তাকে মুক্তোর মতো খোলসে ঢেকে রাখতে হয়, গোপন রাখতে হয়, যত্নে আগলে রাখতে হয়। আমাদের সবার জীবনে সমস্যা আছে। বড় বড় সমস্যা আছে। সেগুলোকে মুক্তোর মতো খোলসে ঢেকে রাখাই জীবনের সৌন্দর্য।

জীবনটাকে খোলা খাতা করে ফেলবে। অনেকে সেখানে পড়বে, লিখবে। কিন্তু বৃষ্টি এলে সেই খাতা বুকে আগলে বাঁচানোর কেউ থাকবে না। আর একটি বিষয় কী জানো, সামগ্রিক বিচারে ব্যক্তিগত জীবন আসলেই তুচ্ছ। আজ আমি হুট করে মরে গেলে কিছুই থেমে থাকবে না। এমনকি পৃথিবীটা বামন গ্রহ হয়ে গেলে ‘কেপলার ৪০২ বি’ এর কিছু যাবে আসবে না। আর সিনেমাটা আমাদের কাছে ব্রহ্মাণ্ড, তাই না?

ফোন করার কথা বলেছো। আমাকে দাদা মানো। সেটা তুমি আমাকে করলে আমিও তোমাকে বোঝাতে পারতাম। সুনেরাহ আসলে এর আগে পিছে কোথাও নেই। সত্যিই নেই। আমি সুনেরাহকে কাছ থেকে দেখেছি। সে সত্যিই ভালো মনের মানুষ, অনেকটা তোমার মতোই। আর রাজ, সত্যিকারের একজন ভালো অভিনেতা। আমি তোমাদের সবাইকে চাই। কাছে থাকো, দূরে থাকো, যাই থাকো ভালো থাকো, ভালো রাখো। কাজটা করতে থাক।

তুমি পাবলিকলি বলেছ, তাই আমাকে উত্তরটা পাবলিক দিতে হচ্ছে। যদিও আমার স্ট্যাটাস শুধু তোমাকে উদ্দেশ্য করে ছিল না। আমি অনেককে বলেছি। সাংবাদিক ও পত্রিকার মালিকদের বলেছি, দর্শকদেরও বলেছি। আশ্চর্যজনকভাবে বাংলা সিনেমা উত্থান হচ্ছে এই সময়। এই বিনির্মানের সময়ে পজেটিভিটি আর সুস্থ প্রতিযোগিতা পারে আমাদের মোটিভেশনটা ধরে রাখতে। তুমি তো জানো কত কষ্ট করে আমাদের কাজ করতে হয়। প্রায়ই মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে যাই। তখন নেগেটিভিটিটা আর নিতে পারি না।

পরী আমি তোমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, অভাবনীয় সম্ভাবনা তোমার মধ্যে। একটা কথা বলি, যদি করতে পার ম্যাজিকের মতো সব বদলে যাবে। শুধু ক্ষমা করে দেওয়াটা চর্চা কর। আর কিচ্ছু লাগবে না তোমার। একদম ভেতর থেকে তোমাকে আলোকিত করবে।

এ মন্ত্রে একটা লাইন আছে, হে সৃষ্টি কর্তা আমকে শক্তি দাও যেন আমি এমন কিছু মেনে নিতে পারি, যা আমি পরিবর্তন করতে সক্ষম নই। এ মূল কথাটা একবার অন্তর দিয়ে অনুভব করো। ম্যাজিকের মতো সব বদলে যাবে। জ্ঞান দিচ্ছি ভেবো না, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। ক্ষমা করে দাও। যদিও সেটা সবচেয়ে কঠিন। কিন্তু সেখানেই সব শান্তি। যেমন শান্তি রাজ্যকে বুকে নিয়ে। ঈশ্বর তোমাকে যে অমিত সম্ভাবনা দিয়ে পাঠিয়েছে খুব কম মানুষের ভাগ্যে তা জোটে। সেই পরীর অপেক্ষায় থাকবে।

আর সবাইকে বলি, ব্যক্তিগত জীবনটাকে ব্যক্তিগত রাখতে দিন দয়া করে। নয়তো যা করছেন তা আপনাদের সঙ্গেও ঘটবে। প্রকৃতি সব ফেরত দেয়। তোমার মহাবিশ্বে কিছু হারায় না তো কভু। আমরা অবোধ, অন্ধ মায়ায় তাই তো কাঁদি প্রভু।