অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে ছোট্ট দ্বীপ ল্যাম্পুডুসা। সম্প্রতি বোটে করে সেখানে যাওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু এই সপ্তাহে সেখানে অবতরণ করেছেন কমপক্ষে ৭০০০ অভিবাসন প্রত্যাশী। এই সংখ্যা দ্বীপটির স্থায়ী অধিবাসীদের সংখ্যার চেয়েও বেশি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
২০২২ সালে একই সময়ে চেয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ইতালি যাওয়া এমন অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। তাদের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার। বেশির ভাগ অভিবাসী উত্তর আফ্রিকা থেকে বোটে করে পাড়ি দেন সেখানে।
এমন অবস্থায় রোববার ওই দ্বীপ সফরে যান ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তার সঙ্গে ছিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তাদেরকে বহনকারী গাড়ি যখন অভিবাসীদের অভ্যর্থনা সেন্টারের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, তখন স্থানীয় জনগণ পথ অবরুদ্ধ করে অল্প সময়ের জন্য।
ওই দ্বীপে তারা যে সমস্যা মোকাবিলা করছেন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। জবাবে মেলেনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি।
আমাদের সর্বোত্তম কাজ করছি।
অভ্যর্থনা সেন্টার পরিদর্শন শেষে মিস ভন ডার লিয়েন একটি ১০ দফা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ ঘোষণা করেন। বলেন, এতে ইতালির ওপর চাপ কমবে। এখানে উল্লেখ্য, ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ভন ডার লিয়েন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি ইতালিতে বলেন, অনিয়মিত এসব অভিবাসন এখন ইউরোপের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে ইউরোপিয়ান ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা সবাই একত্রিত। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মেলোনি বলেন, আপনারা আমাদেরকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে পাশে পাবেন।
যে ১০ দফা পরিকল্পনা দিয়েছেন ভন ডার লিয়েন তার মধ্যে অন্যতম হলো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বৈদেশিক বিষয়ক বর্ডারস এজেন্সি ফ্রনটেক্সকে শনাক্ত করতে হবে যেসব অভিবাসী ইতালি আসছেন, তাদের এবং যারা আশ্রয়ের যোগ্য নন, তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। এ ছাড়া অভিবাসী প্রত্যাশীদের বোঝাই করে যেসব বোট আসবে তাদের ওপর সমুদ্রপথে এবং আকাশপথে নজরদারি বাড়াতে হবে ফ্রনটেক্সকে।
এ বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন ভন ডার লিয়েন। তাদের কাছ থেকে তিনি সমর্থন পাবেন বলে আস্থা প্রকাশ করেন।
এ ছাড়া তিনি তিউনিশিয়ার কোস্টগার্ডদেরকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ দেয়ার গতি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্তমানে সমুদ্রপথে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য প্রধান ‘ডিপার্চার পয়েন্ট’ হয়ে উঠেছে তিউনিশিয়া। একই সঙ্গে তিউনিশিয়াকে অর্থ সহায়তা ত্বরান্বিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভন ডার লিয়েন। পাশাপাশি বৈধ পথে অভিবাসীদের সুবিধা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।