ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের স্তর ও হারে পরিবর্তন আসছে। এতে ব্যাংকে টাকা রাখার খরচ বাড়বে। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশ শুরু হয়। সেখানে এই প্রস্তাব তোলেন মন্ত্রী।
এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এটি দেশের ৫৩তম এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৫তম বাজেট।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনের এ স্রোত ছোট আমানতকারীদের ওপর প্রভাব ফেলবে না, প্রভাব পড়বে বড় আমানতকারীদের ওপর। কারণ, ব্যাংকে গ্রাহকের ১০ লাখ টাকার বেশি থাকলেই বাড়তি শুল্ক দিতে হবে।
এর আগে, গত ২০২০-২১ অর্থ-বছরে ব্যাংকে থাকা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছিল। কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ বছরে এক লাখ টাকার বেশি হলেই আবগারি শুল্ক দিতে হয়। বর্তমানে শুল্কের স্তর ছয়টি থাকলেও ২০২৪-২৫ অর্থ-বছরের বাজেটে তা বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা ও পাঁচ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক রয়েছে।
বর্তমানে এক লাখ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবের স্থিতিতে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হয় না। আবার এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা এবং পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এই দুটি স্তরে কোনো পরিবর্তন আসছে না।
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থ-বছরের বাজেটে ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্কের যে স্তরটি রয়েছে, সেটি ভেঙে দুটি স্তর করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ১০ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত গচ্ছিত টাকায় আগের মতোই তিন হাজার টাকা আবগারি শুল্ক থাকবে। আর ৫০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি পর্যন্ত তিন হাজার টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা শুল্ক বসবে। আর এক কোটি টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান স্তরটিও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। নতুন অর্থ-বছরে এক কোটি থেকে দুই কোটি পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা, দুই কোটি থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা শুল্ক দিতে হবে। বর্তমানে এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি পর্যন্ত আমানতে আবগারি শুল্ক ১৫ হাজার টাকা। ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার যদি স্থিতি পাঁচ কোটি টাকা অতিক্রম করে, তাহলে সেই আমানতের ওপর আবগারি শুল্কের পরিমাণ হবে ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে এই স্তরে ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়।
জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এর আগে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের আগে দুপুর ২টার দিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা অনুমোদন করা হয়। ওই প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে সংসদে পাস হয়ে ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থ-বছর শুরু হবে।