বাংলাদেশ

ঘুষ ছাড়া কোন কাজই করেন না এ ভূমি কর্মকর্তা

9347_IMG_8517.jpeg

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর আলম সেবা নিতে আসা লোকজনের কাছ থেকে ঘুষ ছাড়া কাজ না করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তিনি ঘুষ নিয়েও সঠিক সময়ে কাজ না করে হয়রানি করছেন বলে এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানান অভিযুক্ত আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে ওই ইউনিয়নে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হয়। সেবা গ্রহীতার অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত কর্মকর্তার সঙ্গে।

অভিযোগকারী ব্যক্তি হলেন ওই ইউনিয়নের খেরুদিয়া গ্রামের আবদুর রহমান বকাউলের স্ত্রী আমেনা বেগম লাকী। তিনি সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ায় গত ২৪ জুন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে আমেনা বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামীর নামীয় ৯ শতক জমি খাজনা দাখিল অনলাইন করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। কিন্তু ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আলমগীর আলম তাকে কাজটি করে না দিয়ে টালবাহান করেন। তিনি এই কাজের জন্য ওই কর্মকর্তাকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিলেও সেবা পাননি। পরবর্তীতে গেলে আলমগীর ও তার অফিসের ঝাড়ুদার তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এসব কারণে তিনি প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন।

আমেনা বেগম বলেন, এই কর্মকর্তার কাছে সেবার জন্য গেলে সবাইকে তিনি হয়রানি করেন। তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সরকার যে কয় টাকা বেতন দেয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। টাকা না দিলে আমি কোনো কাজ করবো না। আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী এবং যারা তার কাছে গিয়ে হয়রানির শিকার হন সবার দাবি তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আলমগীর আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সত্যতা যাচাই করছে। অভিযোগের আলোকে আমি ও আমেনা বেগম লাকী বক্তব্য দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, সেবা নিতে আসা আমেনা বেগম লাকী যেসব অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। উনি যখন আমার কাছে সেবা নিতে এসেছেন আমরা তখন অফিসের নিজস্ব কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আর তার কাগজপত্র ও মোবাইল নম্বর নিয়ে সমস্যা ছিলো। সেই জন্য কাজটি করতে দেরি হয়েছে। আমি ২৩ জুন তার কাজ সম্পন্ন করেছি। কিন্তু তিনি ২৪ জুন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আমলে নেয়ার পর উভয়পক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী ও অভিযুক্ত আলমগীর আলমের সঙ্গে সরাসরি নিজ দফতরে কথা বলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, অভিযোগকারী আমেনা বেগম লাকী বলেছেন, তাকে হয়রানি ও অনলাইনে খাজনা পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়েছে। আর আলমগীর আলম তা অস্বীকার করেছেন। মূল সত্যটা বেরিয়ে না আসায় এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি তাদের বক্তব্যের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানাবো। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও