যুক্তরাজ্য

৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭
আরও খবর

কাশ্মীর ইস্যুতে স্টারমার নীতির পরিবর্তন করেছিলেন

9376_IMG_8724.jpeg

ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ব্যবধনে জয়লাভ করেছে লেবার পার্টি। ২০১০ সালের পর এই প্রথম ফের কোনো লেবার পার্টির নেতার ঠিকানা হবে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে। 

কনজারভেটিভ নেতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেন। লেবার পার্টির এই উত্থানের নেপথ্যে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দলের ধারণা পরিবর্তন বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। আর সেই বদলের কাণ্ডারি স্টারমারই। কাশ্মীর ইস্যুতে লেবার পার্টির অবস্থান পরিবর্তন করেন এই রাজনীতিবিদ। তিনি বলেন, কাশ্মীর সমস্যা- ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশ মিলেই সমাধান করবে। এর আগে লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন স্টারমারের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিলেন। 

ভারতের সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। কিন্তু জেরেমি করবিন যখন লেবার পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন তখন থেকেই সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। ভারত সম্পর্কে জেরেমির সমালোচনামূলক মনোভাবের কারণে লেবার পার্টির সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়। ব্রিটেন সরকার কখনওই কাশ্মীর ইস্যুতে নাক গলাতে চায়নি। সেখানে জেরেমির অবস্থান লেবার পার্টিকে বিপদে ফেলে।

২০১৯ সালে জেরেমি নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি একটি প্রস্তাব পাশ করেছিল। এতে কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের হস্তক্ষেপ করার বিষয় ছিল। যা ভারত সরকার ভালো ভাবে নেয়নি। নয়াদিল্লি ওই প্রস্তাবের নিন্দা করে এবং বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘ভোটব্যাংকের স্বার্থে’ এ ধরনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে লেবার পার্টি। যদিও সে সময় ব্রিটিশ সরকার স্পষ্ট জানিয়েছিল, কাশ্মীর ইস্যু ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। সেখানে হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয় ব্রিটেন।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লেবার কনফারেন্স হয়েছিল। সেখানে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিতর্কিত বিষয় উত্থাপন করা হয়েছিল। কাশ্মীর সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, সরকারি ক্ষেত্রে সংঘাত বন্ধ করতে লেবার পার্টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করবে। এটা একমাত্র তখনই সম্ভব হবে যখন ভারত ও পাকিস্তান এক হয়ে কাশ্মীরের শ্রমিকদের পক্ষে কথা বলবে। এমনকি, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলেও আওয়াজ তুলে লেবার পার্টি নেতৃত্ব।

জেরেমি সরে যাওয়ার পর ২০২০ সালে লেবার পার্টির নেতৃত্বের ভোটে বিপুল জয় পান স্টারমার। তার পরই দলের নেতৃত্ব চলে আসে তার হাতে। স্টারমার লেবার পার্টির দায়িত্ব পেয়েই কাশ্মীর ইস্যুতে দলের অবস্থান পরিবর্তনের পথে হাঁটেন। ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে স্টারমার যোগাযোগ বাড়িয়েছিলেন। তার বক্তৃতায় বার বার উঠে এসেছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, জলবায়ু সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা।

প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় স্টারমার বার বার স্বীকার করেছেন, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। ভারত এবং পাকিস্তান, উভয় দেশ মিলেই এ সমস্যার সমাধান করবে। তাতে লেবার পার্টি কোনো ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। কূটনৈতিক মহলের মতে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেখানে নতুন সরকার গড়ার পর ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক ত্বরান্বিত করাই অন্যতম লক্ষ্য হবে তা বুঝেছিলেন স্টারমার।

সর্বাধিক পঠিত


আরও খবর
ভিডিও