অসদাচরণ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে চন্দিকা হাতুরাসিংহেকে গতকাল বরখাস্ত করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর আগে তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল বিসিবি। গত পরশু নোটিশের জবাবও দেন শ্রীলঙ্কান কোচ।
তবে হাতুরুসিংহের সেই নোটিশ সম্পর্কে কিছু জানায়নি বিসিবি।
বিসিবি না জানানোয় নিজের অবস্থান খোদ হাতুরুসিংহেই পরিষ্কার করেছেন। গণমাধ্যমকে দীর্ঘ এক বিবৃতি পাঠিয়ে। বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘২০২৩ বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে একজন খেলোয়াড়ের ওপর কথিত হামলা এবং অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত ছুটি নেওয়ার দাবির বিষয়ে আমার সততা এবং পেশাদারিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলা সাম্প্রতিক অভিযোগের ব্যাপারে আমি এই চিঠি লিখছি। এই ব্যাপারে চুপ থেকে আমি এই ধরনের অনুমানভিত্তিক বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ না করে থাকতে পারব না।
আমি বিশ্বাস করি, এই ধরনের বিষয়গুলো স্পষ্ট করা দরকার। আমি আমার কথাগুলো বলতে চাই।’
যাকে চড় মেরেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেই নাসুম আহমেদের বিষয়টি নিয়ে হাতুরু লিখেছেন, ‘প্রথমত, অভিযুক্ত ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ডাগআউট বা ড্রেসিং রুমে ঘটেছিল, যে জায়গায় বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকে। ৪০ থেকে ৫০টিরও বেশি ক্যামেরা খেলার প্রতিটি মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ধারণ করে।
আমি অভিযোগকারীকে যাচাই করার সুযোগ পাইনি বা কোনো সাক্ষীও পাইনি, আদৌ যদি থেকে থাকে।’
বছরে ৪৫ দিনের বরাদ্দ ছুটির চেয়ে বেশি ছুটি কাটানোর বিষয়ে হাতুরাসিংহে লিখেছেন, ‘ছুটি নেওয়ার দাবির বিষয়ে, আমি স্পষ্ট করতে চাই যে আমি ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নেওয়ার বেলায় সব সময় সিইও এবং ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান উভয়ের কাছ থেকে অনুমতি চেয়েছি এবং পেয়েছি। কোনো সময়ই বিসিবি আমাকে বলেনি যে তারা আমার ছুটি নিয়ে অসন্তুষ্ট। বরং আমি যতবারই ছুটি চেয়েছি, বিসিবি তা মঞ্জুর করেছে। তাদের অনুমতি ছাড়া আমি কখনো ছুটিতে যাইনি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত বলে হাতুরাসিংহে লিখেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে এসব অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত। নতুন সভাপতির মেয়াদের প্রথম দিনে, তিনি প্রধান কোচকে অপসারণের ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি প্রকাশ্য বক্তব্য দিয়েছিলেন। আরেকজন প্রধান কোচ নিয়োগের মাত্র চার ঘণ্টা আগে শোকজ নোটিশ পেয়ে আমি হতভম্ব। সেখানে বলা হয়েছে যে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য হাতে আছে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। ঘটনার ক্রমধারা এই কর্মকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তোলে।’
পরিশেষে সত্যের জয় হবে জানিয়ে হাতুরাসিংহে আরো লিখেছেন, ‘আমি আমার সম্মান রক্ষা করতে সংকল্পবদ্ধ এবং এই বিষয়ে যেকোনো তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবে এবং আমি আমার ভালোবাসার খেলাতে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে পারব।’