তথ্য ও প্রযুক্তি

মহাকাশে উন্মোচন হলো ‘জেমস ওয়েব’র বিশাল আয়না

1049_download (3).jpg

দূরবীক্ষণ যন্ত্র ‘জেমস ওয়েব’ মহাকাশে তার বিশাল আয়না সফলভাবে উন্মোচন করেছে। যাত্রার মাত্র ১৪ দিন পরেই শনিবার (৮ জানুয়ারি) বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী যন্ত্রটি সফলভাবে উন্মোচন করাতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা।

নাসার বিজ্ঞান মিশন অধিদফতরের সহযোগী প্রশাসক থমাস জুরবুচেন এক বিবৃতিতে বলেন, নাসার সফল কাজগুলোর উদাহরণ হলো, জেমস ওয়েব। দলটির জন্য আমি খুব গর্বিত, কয়েক দশকের চেষ্টার ফল হিসেবে যারা এই ধরনের প্রথম কৃতিত্ব প্রদান করেছে।

জানা গেছে,  বিশালাকৃতির এই আয়নার পেছনে সোনার প্রলেপ লাগানো রয়েছে। নাসার নির্মিত এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় আয়না এটি। কিন্তু এর আকার একটি সমস্যা তৈরি করেছিল। আয়নাটি এত বড় ছিল যে এটি একটি রকেটের ভেতরে স্থাপন করা যাচ্ছিল না। পরে প্রকৌশলীরা টেলিস্কোপটিকে চলমান অংশের সিরিজ হিসেবে ডিজাইন করেন, যা অরিগামি-স্টাইলে ভাঁজ করতে পারে এবং চালুর জন্য ১৬ ফুট (৫ মিটার) জায়গার মধ্যে স্থাপন করতে পারে।

আয়নাটি ২১ ফুট এবং ৪ ইঞ্চি (৬ দশমিক ৫ মিটার) প্রসারিত করতে পারে। এটি একটি বিশাল দৈর্ঘ্য, যা এটিকে মহাকাশের বস্তু থেকে আরও আলো সংগ্রহ করতে দেয়। আয়না যত বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারে, টেলিস্কোপ তত বেশি বিশদ পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

বর্তমানে হাবল নামে যে মহাশূন্য টেলিস্কোপটি কাজ করছে- তার চেয়ে এটি প্রায় তিনগুণ বড় এবং ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। এটির নামকরণ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো চন্দ্রাভিযানের অন্যতম স্থপতির নামে।

বিশাল আয়না এবং চারটি অতি-সংবেদনশীল যন্ত্রের কারণে এই জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশবিজ্ঞানীরা মহাশূন্যের অনেক গভীর পর্যন্ত দেখতে পাবেন। এর ফলে তাত্ত্বিকদের মতে প্রথম যে তারাগুলোর আলোয় সাড়ে এক হাজার ৩০০ কোটি বছর আগের বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পর নেমে আসা অন্ধকার কেটে গিয়েছিল- তার অনুসন্ধান এখন করা যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, সেই সময় ঘটা পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার ফলে প্রথমবারের মতো কার্বন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস এবং সালফারের মত 'ভারী পরমাণুগুলো’ গঠিত হয়েছিল- যা প্রাণ সৃষ্টির জন্য ছিল অত্যাবশ্যক।

জেমস ওয়েবের আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে, বহু দূরের গ্রহগুলোর পরিবেশ কেমন তা পর্যবেক্ষণ করা -যার ফলে তারা অনুমান করতে পারবেন যে সেগুলোতে আদৌ প্রাণীর বসবাসের মতো পরিবেশ আছে কিনা।

এ টেলিস্কোপটি যে কক্ষপথে স্থাপিত হবে তা পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। সেখানে মহাশূন্যের তাপমাত্রা হচ্ছে মাইনাস ২৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সূত্র: সিএনএন

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও