মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাইডেনের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর হতাশ হয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। নিজ দলের বাইরেও ভোটারদের ওপরও বাইডেনের সেদিনের পারফরম্যান্স বেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন বাইডেনের এমন পারফরম্যান্সে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত কোনো প্রভাব পড়তে পারে। তাই অনেক মহল থেকেই বাইডেনের প্রার্থীতা নিয়ে শঙ্কা উত্থাপন করা হয়েছে। তারা বাইডেনকে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছেন না। এমন পরিস্থিতিতে সেদিনের বিতর্কে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তার যুক্তিগুলোও নড়বড়ে। সাংবাদিকদের বাইডেন বলেছেন, বিতর্কের আগে বিশ্বজুড়ে কয়েকবার ভ্রমণ করা তার জন্য ঠিক ছিল না। তিনি আরও বলেন, আমি স্টাফদের কথা শুনিনি এবং প্রায় বিতর্কের মঞ্চে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বুধবার এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, বাইডেন বিতর্কে তার হতাশাজনক পারফরম্যান্স ঢাকতে যে কারণ দেখিয়েছেন তাও নড়বড়ে।
কারণ ৮১ বছর বয়সী বাইডেন সর্বশেষ ভ্রমণ করেছিলেন প্রায় দুই সপ্তাহ আগে গত ১৫ জুন। আর বিতর্ক হয়েছে ২৭ জুন। সেদিনের বিতর্কের পর বাইডেনের মানসিক এবং শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাকে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের নেতা রিপ লয়েড ডেগেট। তিনি বলেছেন, আমি আশাবাদী যে তিনি (বাইডেন) আগামী নির্বাচন থেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের মতো বেদনাদায়ক এবং কঠিন সিদ্ধান্তটি নিবেন।
স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের মঞ্চে ওঠেন বাইডেন। সেখানে ট্রাম্পের কাছে প্রায় ধরাশায়ী হয়েছেন বাইডেন। ট্রাম্প বারবার তাকে তার বয়সের কথা উল্লেখ করে খোচা দিয়েছেন। তাতে বাইডেনের অনেকটাই বেহাল অবস্থা দৃশ্যমান হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেছেন আমি অজুহাত দিচ্ছি না, আমি সেদিনের সঠিক ব্যাখ্যা দিলাম।
এই বিতর্কের আগ থেকেই বাইডেনের বয়সের ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। কিন্তু এ বিষয়টি মানতে নারাজ বাইডেন ও তার পরিবার। তার পরিবার মনে করেন তিনি আগামী নির্বাচনের লড়াইয়ে সব দিক থেকেই একজন যোগ্য প্রার্থী। তারা চান বাইডেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। তবে সিএনএনের স্টুডিওতে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৫৭ শতাংশ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতার প্রশ্নে বাইডেনের ওপর তাদের আস্থা নেই। বলাবাহুল্য সেদিনের পারফরম্যান্সে দৃশ্যত ট্রাম্পই ছিল সেরা। যদিও বাইডেন ট্রাম্পের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনাসহ নানা বিষয় তুলে ধরে তাকে টপকাতে চেয়েছিলেন তবে তাতে তিনি সফল হতে পারেননি। বিতর্ক দেখেছেন এমন নিবন্ধিত ভোটারদের প্রায় ৬৭ শতাংশ বলেছেন, ট্রাম্প ভালো করেছেন। অন্যদিকে বাইডেনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৩৩ শতাংশ দর্শক। নানা মহল থেকে বাইডেনকে সরে দাঁড়াতে বল্লেও এখনও তিনি এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি যে তিনি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীতা করবেন না।