সাবেক মুজাহেদীন কমান্ডার আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমদ মাসুদ। ছবি: রয়টার্স
অস্ত্র দিতে রাজি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবানবিরোধী বিদ্রোহী নেতা আহমদ মাসুদ।
ফ্রান্সভিত্তিক গণমাধ্যম প্যারিচ মাচে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) ঐতিহাসিক ভুল কিছুতেই ভুলতে পারছি না। তালেবান কাবুল দখল করার আগে আমি অস্ত্র চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা অস্ত্র দিতে চায়নি। অথচ আমেরিকার তৈরি কামান, ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার এখন তালেবানের হাতে।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। এই ঘটনার পর আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুৎ প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সরকারের কিছু কর্মকর্তা পাঞ্জশির পালিয়ে যান। তারা সেখানে তালেবানবিরোধী ‘ন্যাশনাল রেসিসট্যান্স ফ্রন্ট’ (এনআরএফ) গঠন করেন।
বিদ্রোহীরা উপত্যকায় বসে তালেবানের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিচ্ছেন। তবে যুক্তরাজ্যের একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং অস্ত্রের অভাবে তারা আন্তসমর্পণ করতে পারেন।
যদিও বিদ্রোহ ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রথম সাক্ষাৎকারে আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন আহমদ মাসুদ। তিনি বলেন, আমি আহমদ শাহ মাসুদের সন্তান। আমার শব্দভাণ্ডারে আত্মসমর্পণ বলে কোনো শব্দ নেই। এ সময় তিনি বলেন- আমি মরে যাব, তবুও তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করব না।
তবে মাসুদ এটাও বলেন যে, তিনি সর্বদা তালেবানের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তাদের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির রূপরেখাও প্রণয়ন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা যুদ্ধে আলোচনা থাকে। আমার বাবাও সর্বদা শত্রুদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন। এ কারণে আমরাও আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
আফগানিস্তানের এই উপজাতীয় নেতা বলেন, তালেবান যদি নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখায়, উন্মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গণতন্ত্রে রাজি হয়; তাহলে তো এর মাধ্যমে তারাসহ (তালেবান) সমগ্র আফগান উপকৃত হবে। কিন্তু তালেবান কেন এটা বোঝে না?
তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ফ্রান্সকে অস্ত্র দিয়ে সহাতায়তার আহ্বান জানান তিনি। এই বিদ্রোহী নেতার বাবা আহমদ শাহ মাসুদেরও ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার দুইদিন আগে তালেবান ঘনিষ্ঠ সংগঠন আল কায়েদার হামলায় আহমদ শাহ মাসুদ নিহত হন।