সারা বিশ্ব

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডি বিচে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১২

13038_Untitled-1.jpg

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি বিচে ইহুদি সম্প্রদায়ের হানুক্কাহ উৎসব চলাকালে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ‘হানুক্কাহ বাই দ্য সি’ আয়োজনকে লক্ষ্য করে দুই ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ঘটনার সময় সৈকতে হাজারের বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মানুষজন দিগ্বিদিক ছুটে পালাতে থাকেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই বন্দুকধারীর একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন, যদিও তিনি নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কি না তা নিশ্চিত করা হয়নি। অপর অভিযুক্ত গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। হামলায় অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও একটি শিশুও রয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই হামলাকে প্রায় তিন দশকের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ গণগুলিবর্ষণের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ একে ইহুদি অস্ট্রেলীয়দের ওপর লক্ষ্যভিত্তিক সন্ত্রাসী আক্রমণ আখ্যা দিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বন্ডি বিচে যে ভয়াবহতা নেমে এসেছে তা কল্পনাতীত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে বিপদের মুখে অন্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসা সাধারণ নাগরিকদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন তিনি এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারের আশ্বাস দেন।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে ক্যাম্পবেল প্যারেড এলাকায় গুলির খবর পেয়ে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, এক পর্যায়ে একজন সাধারণ মানুষ এক বন্দুকধারীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেন। হামলাকারীরা দীর্ঘ নলের অস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকায় সন্দেহজনক কিছু বস্তু পাওয়া গেছে, যা বিশেষজ্ঞ দল পরীক্ষা করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে এবং তৃতীয় কোনো হামলাকারী ছিল কি না, তাও তদন্ত করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে রক্ত ও বিশৃঙ্খলার দৃশ্য ছিল ভয়াবহ। স্থানীয় বাসিন্দা হ্যারি উইলসন বলেন, তিনি অন্তত ১০ জনকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছেন এবং চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে ছিল। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী লাচলান মোরান জানান, গুলির শব্দ শুনেই তিনি প্রাণভয়ে দৌড়ে পালান এবং কয়েক মিনিট ধরে থেমে থেমে গুলির শব্দ শুনতে পান। গ্রীষ্মকালীন ব্যস্ত সন্ধ্যায় বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই সৈকতে এমন সহিংসতায় পুরো দেশজুড়ে শোক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। 

সর্বাধিক পঠিত


ভিডিও